বইমেলায় হাসনা বেগমের ‘দার্শনিকদের গল্প’

দর্শন হলো জীবন ও জগতের মৌলিক বিষয়াবলীর অনুসন্ধান। জীবন ও প্রকৃতির সঠিক উপলব্ধি সম্ভব বিচারমূলক চিন্তনের মাধ্যমে আর এই বিচার মূলক চিন্তনকেই উৎসাহিত করে দর্শনকে শুধু বড়দের মাঝে সীমাবদ্ধ করে রাখলে চলবে কেন?
জীবন ও প্রকৃতির পাঠ তো শুরু হয় শৈশবেই। দর্শনকে শিশু ও কিশোরদের কাছে বোধগম্য ও জনপ্রিয় করতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনা বেগম সরল ভাষায় রচনা করেছেন ‘দার্শনিকদের গল্প’ নামক বইটি। দর্শনের জনক হিসেবে খ্যাত থেলিস, দার্শনিকদের গুরু হিসেবে স্বীকৃত সক্রেটিস, স্বপ্নদ্রষ্টা দার্শনিক প্লেটো, সদগুণের ব্যাখ্যা প্রদানকারী দার্শনিক এরিস্টটলসহ সংখ্যা তাত্ত্বিক পিথাগোরাস, স্থিতির দার্শনিক পারমেনেডিস এবং গতির দার্শনিক হিরাক্লিটাসের দর্শন ও জীবন সহজ ভাষায় আলোচিত হয়েছে বইটির প্রথম খণ্ডে।
গ্রিক পরমাণুবাদ এবং মানবকেন্দ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের মতের সাথে বইটিতে আরো আলোচিত হয়েছে এপিকিউরীয় দর্শন, সিনিক দার্শনিকদের সুখ সম্পর্কিত ভাবনা আর স্টোয়িকদের প্রকৃতিপ্রেম। দার্শনিকদের তত্ত্বাবলী আলোচনার পাশাপাশি তাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের চমৎকার উপস্থাপন পাঠকের উপলব্ধির মাত্রাকে উন্নীত করবে নিঃসন্দেহে। বইটিতে সংযুক্ত খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের গ্রিসীয় অঞ্চলের মানচিত্র পাঠকের কল্পনায় দার্শনিকদের জীবনকে ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করবে। বইটি শুধু সরল রচনাশৈলীর জন্য নয়, তত্ত্ব ও তথ্যের উপস্থাপনের প্রাসঙ্গিকতায় শিশু-কিশোরসহ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও চিত্তাকর্ষক।
জাতীয় সাহিত্যে প্রকাশ কর্তৃক প্রকাশিত বইটি পাঠে সাধারণ কৌতূহলী পাঠকসহ দর্শনের ছাত্রছাত্রীরাও উপকৃত হতে পারেন। বইটির প্রথম খণ্ড পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায়, জাতীয় সাহিত্য প্রকাশের স্টলে।
লেখক: মাহমুদা আকন্দ, সহকারী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়