বইয়ের মান কীভাবে বিচার করবেন : আসাদ চৌধুরী

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে দেখা হলো কবি আসাদ চৌধুরীর সঙ্গে। এনটিভি অনলাইনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বইমেলা নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
এবারের বইমেলা কেমন দেখছেন—জানতে চাইলে আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘ভালো লাগছে। মেলার পরিসর বেড়েছে। আগে ছোট ছোট স্টল ছিল, এখন বড় হয়েছে, প্রশস্ত হয়েছে, প্যাভিলিয়ন বেড়েছে। এটা খুব আনন্দের বিষয়। স্টলে বইগুলো দৃষ্টিনন্দন করে উপস্থাপনের চেষ্টা রয়েছে, বইয়ের ওপর পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আয়োজন অনেক সুন্দর।’
বই তো প্রতিবছর প্রায় চার হাজার বের হয়। সেই হারে মানসম্মত বইয়ের প্রকাশ হচ্ছে কি না জানতে চাইলে আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর সবখানেই বই বের হয়। সবাই শেক্সপিয়র, মিল্টন অথবা রবীন্দ্রনাথ হন না। বইয়ের মান আপনি কী দিয়ে বিচার করবেন? এগুলো বলে লাভ নেই।’
মেলায় লোকসমাগম বেশ উপভোগ করেন আসাদ চৌধুরী। বইক্রেতাদের বড় একটা অংশ তরুণ। তরুণদের প্রসঙ্গে আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘তরুণরা বই কেনে বলেই আমরা বেঁচে আছি।’ কিন্তু মেলায় তো যাঁরা আসেন, তাঁদের সবাই বই কেনেন না বলাতে আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘তাতে ক্ষতি কী আছে? মেলা যদি খাঁ খাঁ করত, তখন ভালো লাগত?’
বাংলা কবিতাকে আমরা বিশ্বের দরবারে কতটা পৌঁছে দিতে পারছি—জানতে চাইলে আসাদ চৌধুরী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে জীবনানন্দ দাশের মতো অত বড় কবি, তাঁর ভালো কোনো অনুবাদ হয়নি। এর প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের অনুবাদ দুর্বল। রবীন্দ্রনাথের ভাগ্য ভালো যে, রবীন্দ্রনাথ ইংরেজিটা ভালো জানতেন, অনুবাদটা খুব সুন্দর করেছেন। আমাদের এখানে যাঁরা অনুবাদ করেন, তাঁরা যদি পেশাগতভাবে কাজটি করতে পারতেন, তাহলে মনে হয় আরো ভালো অনুবাদ করার সুযোগ পেতেন। অর্থাৎ একটা পেশাদারিত্ব গড়ে উঠতে হবে। আমাদের এখানে সাহিত্যকে পেশা হিসেবে নেওয়া কঠিন। হুমায়ূন আহমেদের মতো আর কজনই বা আছেন?’
এবারের বইমেলার সার্বিক সাফল্য কামনা করেন আসাদ চৌধুরী। একই সঙ্গে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দিন দিন বইমেলা আরো সুন্দর হবে।