Skip to main content
NTV Online

শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য
  • অ ফ A
  • গদ্য
  • কবিতা
  • সাক্ষাৎকার
  • গ্রন্থ আলোচনা
  • বইমেলা
  • চিত্রকলা
  • শিল্পসাহিত্যের খবর
  • পুরস্কার ও অনুষ্ঠান
  • চলচ্চিত্র
  • আলোকচিত্র
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • শিল্প ও সাহিত্য
ছবি

গল ফোর্টের ইতিহাসে সাদিয়া

তানিয়া বৃষ্টির দিনরাত্রি

সুইমিংপুলে ভাবনা

ভিকারুননিসায় শিক্ষার্থীদের উল্লাস

উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা

স্টাইলিশ পারসা ইভানা

অন্য এক তানজিন তিশা

স্নিগ্ধ নাজনীন নিহা

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এনটিভিতে উৎসবের আমেজ

জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি

ভিডিও
কাজিনস : পর্ব ০৩
কাজিনস : পর্ব ০৩
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৯
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৯
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
টেলিফিল্ম : কে কখন কোথায়
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
ছাত্রাবাঁশ : পর্ব ২৬
নাটক : শেষ গান
নাটক : শেষ গান
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
আলোকপাত : পর্ব ৭৮১
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
ফাউল জামাই : পর্ব ১০৯
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ০৭
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ০৭
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১৫
কোরআনুল কারিম : পর্ব ১৫
গানের বাজার, পর্ব ২৪০
গানের বাজার, পর্ব ২৪০
আসমা সুলতানা
১৩:৫২, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আপডেট: ১৪:১১, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আসমা সুলতানা
১৩:৫২, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আপডেট: ১৪:১১, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আরও খবর
ফ্রান্সে প্রদর্শিত হবে চিত্রশিল্পী বাপ্পীর পেইন্টিং
হত্যা, সন্ত্রাস ও নাশকতার বিরুদ্ধে ঢাবিতে প্রতিবাদী গণচিত্রকর্ম প্রদর্শনী
পোট্রের্টের অষ্টম ফটোগ্রাফি কার্নিভাল
এসএম সুলতানের মৃত্যুবার্ষিকীতে ২ দিনব্যাপী নানা আয়োজন
জাপানের কাহাল গ্যালারিতে চলছে রুমকির একক চিত্রপ্রদর্শনী

গোর্কির ‘মা’

আসমা সুলতানা
১৩:৫২, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আপডেট: ১৪:১১, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আসমা সুলতানা
১৩:৫২, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯
আপডেট: ১৪:১১, ০৪ জানুয়ারি ২০১৯

রুশ লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির বিখ্যাত ‘মা’ উপন্যাসটি এই লেখার বিষয় নয়। আমি আজ অন্য এক গোর্কি ও তাঁর মায়ের কথা বলব, যে গোর্কি ছিলেন একজন চিত্রশিল্পী। লেখক গোর্কির পদবিটি তিনি আত্তীকৃত করেছিলেন। লেখক ম্যাক্সিম গোর্কির মতোই তিনিও ছদ্মনামে পরিচিতি পেয়েছিলেন। আরশাইল গোর্কি (Arshile Gorky) নামে পরিচিত আর্মেনিয়ান-আমেরিকান এই শিল্পীর জন্মনাম ছিল ভোস্টানিক আডোইয়ান। সম্ভবত ১৯০২ থেকে ১৯০৮ সালের মধ্যে কোনো একটি সময়ে, বর্তমান তুরস্কের পূর্বপ্রান্তে দেশটির সবচেয়ে বড় হ্রদ ভান-এর তীরে খোরগম গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ।

শিল্পী আরশাইল গোর্কি

গোর্কি একাধিকবার নিজের জন্মসালের তথ্য পরিবর্তন করেছিলেন, আর সে কারণে তাঁর সঠিক জন্মসালটি জানা সম্ভব হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট রাজ্যের শেরমানে ১৯৪৮ সালের ২১ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন, খবরটি ২২ জুলাই টাইমস ম্যাগাজিনে এসেছিল খানিকটা শ্লেষাত্মক শিরোনামে: ‘গোর্কির কাজিনের আত্মহত্যা’, কারণ গোর্কি নিজেকে লেখক গোর্কির আত্মীয় বলে দাবি করতেন। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে গোর্কি যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর থেকেই নিজের সম্পর্কে অনেক ভুল তথ্য দিয়েছিলেন মানুষকে। নতুন পরিচয় সৃষ্টি নাকি পুরোনো পরিচয় মুছে ফেলার প্রচেষ্টা তাকে এমন কিছু করতে প্ররোচিত করেছিল এই প্রশ্নের উত্তর তার নিজেকে ঘিরে সৃষ্টি করা রহস্যময়তারই অংশ ছিল। তবে আর্মেনিয়ার সেই বালক থেকে মধ্যবিংশ শতাব্দীর যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী হয়ে ওঠার বন্ধুর পথটি ভয়াবহ কিছু দুঃস্বপ্ন থেকে পালিয়ে বাঁচারও অবিরাম একটি সংগ্রাম ছিল। গোপনে নিজের মধ্যে ধারণ করা এই ভাবনাগুলো পরিশেষে জায়গা পেয়েছিল তাঁর বিচিত্র ক্যানভাসে।

এক দুঃস্বপ্ন থেকে বাঁচতে গিয়ে, তিনি বারবার নিয়তির ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন। শিল্পী হিসেবে গোর্কি ছিলেন অত্যন্ত সংবেদনশীল, তাই ফেলে আসা অতীতের বিভীষিকাময় স্মৃতিগুলোকে ভুলতে গিয়ে, একের পর এক অসংখ্য দুর্ঘটনাকে আমন্ত্রণ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি আত্মহত্যা করেন। পেছনে ফেলে রেখে যান তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল আর অসমাপ্ত এক ক্যারিয়ার।

তাঁর শিল্পকলার বিষয়বস্তু ছিল সমসাময়িক সবার মতই : যুদ্ধ, হাতাশা, মৃত্যু, অস্থিরতা, দৈনন্দিন জীবনের টানাপড়েন। এ ছাড়া দুটি ভয়াবহ বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতাও তখন স্মৃতিতে জীবন্ত। তবে তাঁর বিষয়বস্তুতে খানিকটা ভিন্নতা ছিল বাকি সবার থেকে : আত্মজীবনীমূলক। সেই জীবনীতে ছিল একটি গণহত্যার ভয়াবহতা, প্রিয় মাকে হারানোর গভীর বেদনা এবং স্বদেশ থেকে বিতাড়িত হওয়ার অপমান ও যন্ত্রণা। নিজের জন্মদাত্রীকে অনাহারে মৃত্যুবরণ করবার মতো মর্মান্তিক দৃশ্যও তাকে দেখতে হয়েছে কৈশোর পেরোনোর আগেই।

১৯১৫ থেকে ১৯২৩ দীর্ঘ সাত বছর ধরে অটোমান সাম্রাজ্যের আর্মেনিয়ান জনগোষ্ঠীকে সহ্য করতে হয়েছিল অসহনীয় নির্যাতন। অটোমান রাষ্ট্রযন্ত্র ভূ-রাজনৈতিক এবং জাতিগত বিদ্বেষের একটি জটিল মিশ্রণে প্ররোচিত হয়ে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনীয়কে বাস্তুচ্যুত করে ভয়াবহ একটি মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিল। বিংশ-শতাব্দীতে ধারাবাহিকভাবে ঘটা বহু গণহত্যার এটাই ছিল সূচনা।

১৯০৮ সালে গোর্কির বাবা পরিবারের সবাইকে ছেড়ে আগেই আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১৯১৫ সালে গোর্কি, তিন বোন ও তাঁর মাসহ রুশ অধিকৃত এলাকায় শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নেন। ১৯১৯ সালে গোর্কির মা তাঁর কোলে মাথা রেখেই মারা গিয়েছিলেন। ১৯২০ সালে ছোট বোন ভার্টুসকে সঙ্গে নিয়ে গোর্কি অবশেষে আমেরিকাতে আসতে পেরেছিলেন, কিন্তু বাবার সঙ্গে গড়ে ওঠা দূরত্বটা রয়ে গিয়েছিল চিরকাল। অন্যদিকে, গোর্কি তাঁর মায়ের স্মৃতিকে আগলে রেখেছিলেন সারাজীবন। অবশেষে তিনিও মায়ের মতো নিয়তির শিকার হয়েছিলেন। শিল্পকলার ইতিহাসে বিষয়বস্তু হিসাবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গণহত্যার কথা আসলেই প্রথমেই গোর্কির নাম আসবে, কারণ তিনি বিংশ-শতাব্দীর প্রথম গণহত্যার শিকার ছিলেন। গোর্কির অনন্য অসাধারণ শিল্পকর্মগুলো সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে ।

গোর্কির অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেশনিজমের (বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদের) শিল্পকর্মগুলো পৃথিবী বিখ্যাত হলেও, তিনি মূলত আলোচিত হয়েছেন তাঁর ‘দি আর্টিস্ট এ্যান্ড হিজ মাদার’ (১৯২৬-১৯৩৬) তৈলচিত্র দুটোর জন্য। গণহত্যা শুরুর কিছুদিন আগে, ১৯১২ সালে শিল্পী এবং তাঁর মা স্টুডিওতে গিয়ে একটি ছবি তুলেছিলেন। এটাই ছিল তাদের একমাত্র আলোকচিত্র । আলোকচিত্রটা তিনি সারা জীবন নিজের কাছে রেখেছিলেন এবং সেখান থেকে তিনি বারবার অনুশীলন করেছিলেন। প্রথমে রেখাচিত্রের মাধ্যমে, পরে মায়ের সম্পূর্ণ প্রতিকৃতি এঁকেছেন কাগজে চারকোল দিয়ে। এবং পরিশেষে সম্পূর্ণ আলোকচিত্রটির দুটো তৈলচিত্র নির্মাণ করেছেন। যেগুলো আজ পৃথিবী বিখ্যাত। চারকোলে আঁকা প্রতিকৃতিটি বেশ পুঙ্খানুপুঙ্খ, বাস্তবধর্মী, যত্নশীল, সতর্ক, নিপুণ হাতে আঁকা।

তৈলচিত্র দুটি মূলত মূল আলোকচিত্রের একটা ইন্টারপ্রিটেশন, কম্পোজিশন বা বিন্যাসধর্মী প্রচেষ্টা। শিল্পী পুঙ্খানুপুঙ্খতায় মনোযোগ দেননি। শুধু গণহত্যার সেই মুহূর্তটির অনুভূতি ধরতে চেয়েছিলেন তাঁর শিল্পকর্মে। মায়ের মুখটাকে দেখে মনে হয় রক্তশূন্য, ভীত-সন্ত্রস্ত, ভাবশেলহীন প্রায় একটি মুখোশ। গোর্কি নিজের চুল এঁকেছেন যেন পরচুলা, বেশ বৈষম্য সৃষ্টি করে। তাকেও কাঠপুতুলের মতো অনুভূত হয়। মুখোশের আড়ালে দুজনই যেন গণহত্যার কথা, তাদের দূর্বিসহ অভিজ্ঞতার কথা গোপন করতে চাচ্ছেন। প্রথম চিত্রে গোর্কি ও মায়ের মাঝে কিছুটা ব্যবধান রয়েছে, পরেরটিতে মাকে স্পর্শ করে আছেন এভাবে নিজেকে এঁকেছেন। গোর্কির মায়ের এপ্রনের ফুলগুলোকেও বাদ দিয়েছেন। কিছু প্রকট ধারালো রেখোর কারণে শরীরের অবয়বকে আড়ষ্ট মনে হয়। দুটো কাজেই তুলির আঁচড়গুলো খুব অসমাপ্ত, যেন কোনো খসড়াচিত্র। প্রথমটিতে তিনি হলুদাভ বাদামি ও ছাই রঙের ব্যবহার করেছেন। পরেরটিতে করেছেন ধূসর প্রাকৃতিক রং এবং রমনীয় রং: লাল বাদামি ও গোলাপি। এখানে তাদের চেহারা আরো বেশি মলিন, মুখের পুঙ্খানুপুঙ্খতায় ঘাটতি দেখা যায়। মায়ের চোখ ভেতরে ঢুকে আছে, যা দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার বা অনাহারে থাকার জন্য হতে পারে।

দি আর্টিস্টস মাদার (১৯৩৬)। কাগজে চারকোল, ৬৩ বাই ৪৮ সেমি, আর্ট ইনস্টিটিউট অব শিকাগো, শিকাগো

মাথায় স্কার্ফ পরা গোর্কির মাকে দেখে শান্ত স্বভাবের এবং ধার্মিক বলে মনে হয়। উচ্চ বংশীয় পরিবারের মেয়ে ছিলেন তিনি। পারিবারিকভাবে শিক্ষার সুযোগও পেয়েছেন এবং জানতেন শিল্পকলার কদর। গোর্কি মায়ের কাছ থেকে সৃষ্টিশীলতার গুণগুলো পেয়েছিলেন। মাকে বলতেন নান্দনিক কবি বা নন্দনতত্বের রানী। জীবন প্রায়শই এমন একটা অবস্থানে মানুষকে দাঁড় করিয়ে দেয়, যখন জন্মদাতা পিতামাতাও হয়ে যায় সন্তানের মতো, তাঁদের দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে সন্তানের কাঁধে। গোর্কি সারাজীবন সেই অনুশোচনায় অনুতপ্ত ছিলেন যে তিনি তাঁর মাকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি। সেই যন্ত্রণা তাঁকে সারা জীবন তাড়া করে ফিরেছে। গোর্কি যখন তাঁর মায়ের সঙ্গে ছবিটা তুলে ছিলেন তার পরবর্তী সময়ে, মাকে অসুখে ভুগতে দেখেছেন, অনাহারে কষ্ট পেতে দেখেছেন। তাঁর সেই স্মৃতির স্তরগুলোকে তিনি ছিঁড়ে ফেলতে পারেননি, পারা সম্ভব নয়, যখন তিনি চিত্রকলাগুলা নির্মাণ করেছেন, তাঁর সেই অভিজ্ঞতার প্রভাব আছে কাজগুলোতে। গোর্কি হয়তো খুব শক্ত করে মায়ের হাত দুটো ধরে বসে ছিলেন তাঁর মৃত্যুর সময়, সেই হাত দুটো আঁকা তাঁর জন্য খুবই কষ্টকর ছিল। সে কারণে গোর্কি বারবার হাত এঁকেও মুছে দিয়েছেন। চিত্রে হাতগুলো দেখলে মনে হয় ব্যান্ডেজ বাধা বা হাতমোজা পরা। গোর্কি এই চিত্রকর্মগুলো করতে দীর্ঘ ১০ বছর সময় নিলেও দেখে মনে হয় যেনো গোর্কির জীবনের মতোই অসমাপ্ত ।

বাঁয়ে : দি আর্টিস্ট অ্যান্ড হিজ মাদার (১৯২৬-১৯৩৬) ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ৬০ বাই ৫০ ইঞ্চি, হুইটনি মিউজিয়াম অব আমেরিকান আর্ট, নিউইয়র্ক, মাঝে: আলোকচিত্র (১৯১২), ডানে : দি আর্টিস্ট অ্যান্ড হিজ মাদার (১৯২৬-১৯৩৬) ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ৬০ বাই ৫০ ইঞ্চি, ন্যাশনাল গ্যালারি অব আমেরিকা, ওয়াশিংটন ডিসি।

১৯২৫ সালে গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্কুল অব আর্টে তিনি ভর্তি হন ছাত্র হিসেবে। কিন্তু পরিচালক তাঁর দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে শিক্ষকতা করবার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি শিল্পী মার্ক রথকোর শিক্ষক ছিলেন একই স্কুলে। গোর্কি শিল্পকলার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে না পারলেও, থেমে থাকেননি কখনও, তিনি লাইব্রেরি থেকে, বিভিন্ন মিউজিয়াম ও গ্যালারি ঘুরে নিজে নিজে শিখেছেন। এবং দীর্ঘ দুই দশক ধরে নানা ধরনের শৈলী, বিভিন্ন শিল্পীর শৈলী অনুকরণ করবার পরে নিজের নিজস্ব শৈলী সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর ওপরে রয়েছে শিল্পী সেজান, মাতিস, মিরো, পিকাসো, ব্রাক, ভিনসেন্ট, দে কুনিং এবং আরো অনেকের প্রভাব। তাই বলা যেতে পারে ইম্প্রেশিনিজম থেকে সুরিয়েলিজম সবকিছুর প্রভাব ছিল গোর্কির ওপর। গোর্কির নিজস্ব শৈলী ছিল বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদ।

যদিও তাঁর প্রথম দিককার কাজগুলো বেশ আঁটসাঁট : জ্যামিতিক কিংবা কিউবিজম শৈলীর ফর্ম ও সরল-রেখার ব্যবহার এবং পরে বেশ শিথিল, রং গড়িয়ে পরা, অর্গানিক বা প্রাকৃতিক বায়োমরফিক ফর্ম , যেখানে ছন্দময়তা বৈশিষ্ট্যসূচক ছিল। ব্যক্তিজীবনে যেমন তিনি নিরন্তরভাবেই আত্মপরিচয়ের সংকটে ভুগেছেন তেমনি তাঁর শৈলীও দিক পরিবর্তন করেছে প্রায়শই। তাঁর অভিজ্ঞতার প্রত্যক্ষ প্রকাশ এড়াতেই বিমূর্ততার আশ্রয় নিয়েছিলেন। কাজগুলো সে কারণেই কবিতা-সদৃশ, যত পড়া যায় ততই গভীরে পৌঁছানো সম্ভব। নিউ ইয়র্কের শিল্পী মহলে গোর্কি পরিচিত মুখ ছিলেন। অবিরাম পরিশ্রমের মাধ্যমেই আমেরিকার বিমূর্তবাদের অন্যতম শিল্পী হিসেবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত মিউজিয়ামের দেয়ালে এখন গোর্কির শিল্পকর্ম শোভা পাচ্ছে।

এমনিতেই ঘটনাবহুল তার সংক্ষিপ্ত জীবনে শেষ দশকটি ছিল দুর্ঘটনায় পরিপূর্ণ। ১৯৪১ সালে আগনেস মাগ্রুডেরকে বিয়ে করেছিলেন। ১৯৪৬ সালে তাঁর স্টুডিও পুড়ে গিয়েছিল আগুনে। স্টুডিওতে রাখা তার ২৭ টি চিত্রকর্ম পুড়ে যায়, যার মধ্যে শিল্পীপত্নীর কিছু প্রতিকৃতিও ছিল । একই বছরে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য কোলোস্টমি অপারেশন হয় তার। গোর্কি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বেশ কয়েক বছর আগে তিনি একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু নিজের চিত্রকর্মের কথা ভেবে ফিরে আসেন জীবনে। তিনি তাঁর শিল্পকর্ম হারানোর বেদনা সহ্য করতে পারেননি । আপাতদৃষ্টিতে সব কিছু ঠিকভাবেই চলছে মনে হলেও, তাঁর হৃদয়ের গভীর ক্ষতগুলো কোনোদিনও সেরে ওঠেনি। এরপর ১৯৪৮ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় ঘাড়ে আঘাত তার আঁকার হাতটিকে সাময়িকভাবে অবশ করে দিয়েছিল। এই পর্যায়ে গোর্কির স্ত্রী তাঁদের দুই কন্যাসন্তানসহ তাঁকে ত্যাগ করেন অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে। গোর্কি আর সব কষ্ট সহ্য করলেও এই কষ্টটা আর মেনে নিতে পারেননি। তিনি আত্মহত্যা করেন। শেরম্যানের নর্থ কাউন্টিতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

গোর্কির শিল্পকর্ম যেকোনো বিমূর্ত শিল্পকলার মতোই মনে হয়, যতক্ষণ না তাঁর জীবন সম্পর্কে জানছি ততক্ষণ এই সৃষ্টিগুলোর গভীরতা বোঝা অসম্ভব। গোর্কি ইউরোপীয় পরাবাস্তব শৈলীর সঙ্গে আমেরিকান বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদের সমন্বয় করে গেছেন অত্যন্ত সফলভাবে। যেহেতু গোর্কি অনেক সফল শিল্পীদের শৈলীর অনুকরণ করেছেন, সেহেতু গোর্কি শিল্পকলার ইতিহাস থেকে নিয়ে নিজের শিল্পকর্মকে সমৃদ্ধ করেছেন নাকি শিল্পকলার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন তাঁর অসাধারণ শিল্পকর্মগুলোকে যোগ করে, তার বিচার করা সম্ভব নয়। উপরন্তু গোর্কির আঁকা ‘দি আর্টিস্ট অ্যান্ড হিজ মাদার’ শিরোনামের তৈলচিত্রটি অধুনিক সমাজের গণহত্যার বিষয়ে শিল্প-নির্মাণের একটি জ্বলন্ত উদাহরণ; একটি দরজা বলা যেতে পারে। যে দরজা দিয়ে পরবর্তীকালে অনেক শিল্পীই হেঁটে গিয়েছেন তাদের নিজস্বতার দিকে।

দ্য ব্ল্যাক মঙ্ক (১৯৪৮), ক্যানভাসে তৈলচিত্র, ৭৮.৯ বাই ১০১.৫ সেমি, ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব মাদ্রিদ, স্পেন।

আলোকচিত্রটি যদি ফ্রেমে বন্দি হয়ে থাকত বাড়ির দেয়ালে একটি স্মৃতিচিহ্নের মতন, মিউজিয়ামের দেয়ালে স্থান পেত না তা নয়, কিউরেশনের কল্যাণে শিল্পীর একটি ব্যক্তিগত স্মৃতি হিসেবে হয়তো প্রদর্শিত হতো। কিন্তু গোর্কি এই আলোকচিত্রটিকে নিজের শিল্পকলায় স্থান দিয়েছেন এবং তৈলচিত্র নির্মাণ করবার মাধ্যমে, ছোট্ট একটা স্মৃতির টুকরোকে চিরস্থায়ী অবস্থান দিয়েছেন শিল্পকলার ইতিহাসে ও মিউজিয়ামের দেয়ালে এবং দর্শকদের হৃদয়ে। মানুষকে প্রশ্ন করবার সুযোগ করে দিয়েছেন যুদ্ধ নিয়ে, মানবজাতির ইতিহাস নিয়ে, মানব-সম্পর্ক নিয়ে। মানুষকে উপাদান দিয়ে গেছেন মানবতার কথা ভাবতে। পৃথিবীকে দেখিয়ে গেছেন যুদ্ধ ও গণহত্যা কীভাবে একটি জাতিকে, একটি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয় কোনো স্বতন্ত্র শিল্পীর তুলির কাছে। কারণ শিল্পী সেই কালো অধ্যায়কে নিজের শিল্পকর্মে স্থান দিয়ে ইতিহাস করে রাখতে জানেন। তাই জীবন তাকে অসীম যন্ত্রণা দেওয়ার পরেও তিনি সবাইকে বিনিময়ে ভালোবাসায়ই দিয়ে গেছেন। এমনকি শিল্পী বিদায় বেলায় লিখে রেখে গেছেন ভালোবাসার কথা তাঁর শেষ বাক্যটিতে, ‘গুডবাই অল মাই লাভডস’!

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. মেয়ের মা হলেন কিয়ারা
  2. গায়ক অরিজিৎ সিং এবার পরিচালক, বানাচ্ছেন প্যান–ইন্ডিয়ান সিনেমা
  3. ৩ হাজার টাকার লোভে বাংলা শেখেন অমিতাভ বচ্চন
  4. ‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’
  5. রোগা হওয়া প্রসঙ্গে কী জানালেন করণ?
  6. প্রিয়াঙ্কার নাকের অস্ত্রোপচার নিয়ে মুখ খুললেন প্রযোজক
সর্বাধিক পঠিত

মেয়ের মা হলেন কিয়ারা

গায়ক অরিজিৎ সিং এবার পরিচালক, বানাচ্ছেন প্যান–ইন্ডিয়ান সিনেমা

৩ হাজার টাকার লোভে বাংলা শেখেন অমিতাভ বচ্চন

‘নেটফ্লিক্স সাহসী গল্প বলতে ভয় পায়, দর্শক বোঝে না’

রোগা হওয়া প্রসঙ্গে কী জানালেন করণ?

ভিডিও
কাজিনস : পর্ব ০৩
কাজিনস : পর্ব ০৩
নাটক : শেষ গান
নাটক : শেষ গান
এই সময় : পর্ব ৩৮৪৮
এই সময় : পর্ব ৩৮৪৮
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
জোনাকির আলো : পর্ব ১৩৪
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৯
আপনার জিজ্ঞাসা : পর্ব ৩৩৯৯
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮৩
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৮৩
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ১১
এনটিভি'র নিমন্ত্রণে : পর্ব ১১
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৭১
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ০৭
আজ সকালের গানে (লাইভ) : পর্ব ০৭
রাতের আড্ডা : পর্ব ১১

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x