বইমেলা ফিরে পাচ্ছে আপন পরিবেশ
অমর একুশে গ্রন্থমেলার চতুর্থ দিন আজ সোমবার। আজ মেলা শুরু হয় বিকাল তিনটায়। আজ বইমেলা প্রাঙ্গণে ধুলো কম বলে সকলে জানিয়েছেন। প্রথম দুদিন ধুলো নিয়ে সকলের মাঝে অসন্তোষ ছিল। এবার বইমেলার সোহরাওয়ার্দী অংশে ইট বিছিয়ে তার উপর বালি দিয়ে মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রথম দুদিন মেলার কাজ শেষ না হওয়ায় ধুলোতে দর্শনার্থীদের নাকে মাস্ক পরে ঘুরতে হয়েছে। তবে গতকাল থেকে অবস্থা স্বাভাবিক। মেলা শুরু হওয়ার আগ দিয়েই টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর ও মেলার মাঠজুড়ে পানি ছিঠানো হয়েছে। মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার প্রবেশ পথের ফুটপাতেও পানি স্প্রে করার কথা বলে দেওয়া হয়েছে।
নতুন বই
মেলার চতুর্থ দিন প্রতিটা প্রকাশনী সংস্থা থেকে বেশকিছু নতুন বই এসেছে। এ দিনে বাংলা একাডেমিতে নতুন বই জমা পড়েছে ১৪১টি। প্রথম দিন নতুন বই জমা পড়েছিল ৭টি। দ্বিতীয় দিনে ৮১টি। তৃতীয় দিনে ১৩৮টি। গল্প-উপন্যাস-কবিতা-প্রবন্ধ-অনুবাদ-শিশুসাহিত্য সব ধরনের বই আছে এ তালিকায়।
আলোচনা পর্ব
দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয়েছে বইমেলার মূল মঞ্চের আলোচনা পর্ব। আলোচনা পর্বটি শুরু হয় বিকাল ৪টায়। আজকের আলোচনার বিষয় ছিল: ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি অর্জনের সুবর্ণজয়ন্তী। প্রবন্ধকার নূহ-উল-আলম লেনিন। তিনি প্রবন্ধপাঠ শেষ করলে তাঁর প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন হারুন অর রশিদ, আনোয়ারা সৈয়দ হক ও সুভাষ সিংহ রায়। সভাপতির আসনে ছিলেন তোফায়েল আহমেদ। এরপর শুরু হয় কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও সংগীত সন্ধ্যা।
আমি লেখক বলছি
অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের সংযোজন 'আমি লেখক বলছি' মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কথাশিল্পী নাসিমা আনিস, কথাশিল্পী জাকির তালুকদার, চলচ্চিত্র সমালোচক-লেখক বিধান রিবেরু, কবি তিথি আফরোজ ও কবি গিরিশ গৈরিক। উল্লেখ্য, এ মঞ্চে বিকাল ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ জন করে লেখক থাকেন। প্রতি লেখক ২০ মিনিট করে এই মেলায় প্রকাশিত বই নিয়ে কথা বলেন। সঞ্চালনায় থাকেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা। এই মঞ্চে আলোচক হিসেবে অংশ নেয়ার পদ্ধতি হলো, আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে এক কপি বই জমা দেবেন। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বই জমা নেয়া হয়। এর জন্য কোনো ফি লাগবে না। নির্বাচিত বইয়ের লেখকের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি থেকে মনোনীত কমিটি এই বই বাছাই করবে। বইয়ের প্রকাশকাল হতে হবে মার্চ ২০১৮ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
মোড়ক উন্মোচন
মেলার তৃতীয় দিন মোড়ক উন্মোচন মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ৯টি বইয়ের। তৃতীয় দিন ৮টি ও দ্বিতীয় দিন ৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচিত হয়। এই মঞ্চের পদ্ধতি হলো, আগ্রহী লেখক বা বইয়ের প্রকাশক মেলার মূল তথ্যকেন্দ্রে মোড়ক উন্মোচনের উদ্দেশ্যে বই জমা দেবেন। এজন্য তাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। বাংলা একাডেমির ভেতরে এই তথ্যকেন্দ্রে বিকাল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বই জমা নেয়া হয়।
লিটলম্যাগ চত্বর
মেলার চতুর্থ দিনে লিটলম্যাগ চত্বরে অনেক লেখককে আসতে দেখা গেছে। সব স্টলে এখনো ব্যানার লাগানো হয়। আজও দেখা গেছে স্টলের উপরে কাপড় দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমির আরও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছেন সকলে। প্রতিবারের মতো এবারও লেখক-সম্পাদকদের মিলনমেলা ও আড্ডার অন্যতম স্থান হয়ে উঠুক লিটলম্যাগ চত্বরটি, এমনই প্রত্যাশা সম্পাদকদের।
আগামীকাল মঙ্গলবার মেলার পঞ্চম দিন।মেলা শুরু হবে বিকাল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।