বইমেলায় জাহিদ নেওয়াজ খানের দুটি বই

এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সাংবাদিক ও লেখক জাহিদ নেওয়াজ খানের দুটি নতুন বই প্রকাশিত হবে। আর ‘ম্যাজিক মোবাইল’ নামের কিশোর উপন্যাসের বইটি দু-তিন দিনের মধ্যে মেলায় চলে আসবে। বইটি প্রকাশ করবে শ্রাবণ প্রকাশনী।
‘ম্যাজিক মোবাইল’ নামের কিশোর উপন্যাসের বিষয়সংক্ষেপ এ রকম : ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত কুমার বিকাশ বিদ্যাপীঠ ঐতিহ্যবাহী এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শুধু লেখাপড়া নয়, নানা কর্মকাণ্ডের জন্য স্কুলটি পুরো জেলায় পরিচিত এক নাম। স্কুলের নবম শ্রেণির ছেলেরা একটা অ্যাপ বানিয়েছে, যার নাম ‘ম্যাজিক মোবাইল’। ইভ টিজিং থেকে শুরু করে মাদক কিংবা প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ দমনে কাজ করে এই অ্যাপ। এর মূল কারিগর ক্লাস নাইনের ফার্স্ট বয় পিকু। সঙ্গে আছে চতুর বাবুসহ কুমার বিকাশ বিদ্যাপীঠের পুরো নবম শ্রেণি। তাদের সহযোগী শ্যামাসুন্দরী বিদ্যানিকেতনের ঝুম্পা-টিপটিপ এবং আরো কয়েকজন। প্রায় সব ক্ষেত্রেই সফল হয় পিকু অ্যান্ড গং। কিন্তু এক সন্ধ্যারাতে ক্লাস ফাইভের একটি ছেলে যখন জরুরি এক কাজে ‘মোবাইল ম্যাজিক’ টেকনোলজি চেয়ে বসে, তখন গভীর সমস্যায় পড়ে যায় পিকু। সে এখন কী করবে? বাচ্চা ছেলেটির চাওয়া অনুযায়ী মানবিক এক সমস্যার সমাধান করতে পারবে সে? এখানেও কি সফল হবে ‘ম্যাজিক মোবাইল’।
এর মধ্যে আবিষ্কার প্রকাশনী থেকে ‘দ্য গ্রিন ম্যান’ বইটি মেলায় চলে এসেছে।
‘দ্য গ্রিন ম্যান’ বইটির বিষয়সংক্ষেপ এ রকম : ভাষা হিসেবে ইংরেজির গুরুত্ব কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক যোগাযোগে যেমন ইংরেজির প্রয়োজন, তেমনি জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চাতেও। দেশ হিসেবে নিজেরা অর্থনৈতিক অগ্রগতির শিখরে পৌঁছাতে না পারলে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজিকে আমাদের মেনে নিতেই হবে। আবার সেই শিখরে পৌঁছাতেও ইংরেজি জানাটা খুব দরকার। এ জন্য কেউ কেউ ইংরেজি ভাষাকে প্রযুক্তি হিসেবে মনে করেন।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাতেও তাই ইংরেজিকে উপযুক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমাদের ছেলেমেয়েরা প্রায়োগিক ইংরেজি শিখছে কি? তারা হয়তো পরীক্ষায় নম্বর পাচ্ছে, উচ্চ জিপিএ নিয়ে এসএসসি-এইচএসসি পাস করছে; কিন্তু প্রথমে উচ্চশিক্ষা এবং পরে কর্মক্ষেত্রে গিয়ে বুঝতে পারছে, স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে তারা ওই ভাষাটা খুব ভালোভাবে শিখতে পারেনি। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার ফল আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে বাস্তবতাটা দেখিয়ে দিয়েছে, ৯০ ভাগ ছেলেমেয়ে ইংরেজিতে পাস নম্বরই পাচ্ছে না। এই যে ব্যর্থতা, এটা যতটা না ছেলেমেয়েদের দোষ, তার চেয়ে বেশি পদ্ধতির। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটা এমন যে নম্বর পাওয়া যায়, কিন্তু খুব ভালোভাবে শেখানো হয় না কিছু। ইংরেজিও তার ব্যতিক্রম নয়। নিজের অভিজ্ঞতা সেটাই বলে, আমার বিশ্বাস আরো অনেকের একই রকম অভিজ্ঞতা আছে। অনেকের সঙ্গে গল্পচ্ছলে নিজের অভিজ্ঞতা জানানোর সময় কেউ কেউ বলেছেন, আরো বেশি মানুষের গল্পগুলো জানা দরকার। এ জন্য তাঁরা লিখে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সেই পরামর্শ মেনেই বিষয়টিকে আরো বেশি করে আলোচনায় রাখার জন্য এ বই। তবে এটি কোনো ইংরেজি শেখার বা শেখানোর বই নয়। এর মূল উদ্দেশ্য, সমস্যাগুলো আলোচনায় নিয়ে আসা।
পেশায় সাংবাদিক জাহিদ নেওয়াজ খানের মোট বইয়ের সংখ্যা সাত। এর মধ্যে আছে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ওপর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড : সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রামাণ্য দলিল’, ‘গণজাগরণে উন্মোচিত মুখোশ’, সাংবাদিকতাবিষয়ক বই ‘মোবাইল যুগে সাংবাদিকতা’, শিশুতোষ নাটক ‘সেলফিকাণ্ড’ এবং উপন্যাস ‘মূর্তিকারিগর’।