প্রকাশকের কথা
আজকের তরুণ লেখকরাই আগামী দিনের প্রতিনিধি : আফজাল হোসেন

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রতিবছরই প্রকাশকরা নতুন নতুন বই নিয়ে উপস্থিত হন পাঠকের সামনে। তাঁদের আয়োজন ও বই-ভাবনা নিয়ে আমাদের এ আয়োজন। আজ এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন অনিন্দ্য প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আফজাল হোসেন।
প্রশ্ন : এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কতটা নতুন বই আসছে অনিন্দ্য প্রকাশ থেকে?
আফজাল হোসেন : প্রায় ৮০-৮৫টি নতুন বই আসছে। এখনো সব নতুন বই ছাপার কাজ শেষ হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে তা চলে আসবে বলে আশা করছি।
প্রশ্ন : এর মধ্যে আপনার কাছে বিশেষ মনে হয়েছে এমন পাঁচটি বইয়ের কথা বলুন।
আফজাল হোসেন : আলাউদ্দিন আল আজাদের ‘অপ্রকাশিত রচনাবলী’ এম আর মাহবুবের সম্পাদনা, খালেদ হোসাইনের ‘কাকে বলি অন্ধকার কাকে বলি আলো’, মোহিত কামালের নজরুল ইসলামকে নিয়ে লেখা ‘দুখু মিয়া’, মোশতাক আহমেদের সায়েন্স ফিকশন ‘রিবিট ও এলিয়েন নিনিট’ ও মাহবুব ময়ূখ রিশাদের ‘দিকশূন্যপুর’ আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
প্রশ্ন : এ পাঁচটি বই আপনার কাছে ভালো লাগার বিশেষ কারণগুলো একটু বলবেন।
আফজাল হোসেন : আলাউদ্দিন আল আজাদের অপ্রকাশিত লেখাগুলো সাহিত্যের জন্য মূল্যবান। আমি তা উপলব্ধি করতে পেরে উনার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘অপ্রকাশিত রচনাবলী’ সংকলনের দায়ভার গ্রহণ করি। সম্পাদনা করেছেন এম আর মাহবুব, ভূমিকা লিখেছেন ড. আনিসুজ্জামান। এ ছাড়া খালেদ হোসাইনের কবিতা এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে লেখা দুখু মিয়া বিষয়ের কারণে আমার কাছে বিশেষ। এ দুজনের লেখার মান অত্যন্ত উন্নত। এ ছাড়া ড. জাফর ইকবালের পর সায়েন্স ফিকশন ভালো লিখছেন এমন একজন হলেন মোশতাক আহমেদ। আর একজন জাফর ইকবালকে নিয়ে পড়ে থাকলে তো হবে না। অন্যদেরও সুযোগ করে দিতে হবে। আর মাহবুব ময়ূখ রিশাদ পেশায় ডাক্তার হওয়ার পরও সাহিত্য নিয়ে তাঁর বেশ আগ্রহ। তাঁর আগ্রহ এবং সাহিত্যিক মান সমৃদ্ধ বলে ‘দিকশূন্যপুর’ আমার ভালো লাগা বইগুলোর মধ্যে আছে।
প্রশ্ন : এবার মেলার পরিস্থিতি কেমন দেখছেন? স্টল দখল নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?
আফজাল হোসেন : মেলার সার্বিক পরিস্থিতি বেশ ভালোই মনে করি। যদিও মনে হচ্ছে, পাঠকরা মেলাকে এখনো ঠিক নিরাপদ মনে করছেন না। তবু আমার পাঠকের প্রতি অনুরোধ, তাঁরা যেন মেলায় এসে নিজেদের পছন্দমতো বই কিনে নেন। শাহবাগ থেকে শুরু করে হাইকোর্টের মোড় পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। সুতরাং দুঃখজনক কোনো ঘটনা ঘটানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। স্টল দখল নিয়ে বেশ সমস্যা হয়েছে। অনেকে নিজের পছন্দমতো স্থানে স্টল বসিয়ে নিয়েছেন। এবার যদি বাংলা একাডেমি এর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে ভবিষ্যতেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ছাড়া অন্যরাও এ ধরনের আচরণ করতে পারে, যাঁরা এবার নিয়ম মানার খাতিরে এ কাজটি করেননি।
প্রশ্ন : পাঠক ও লেখকদের কাছ থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন। তা আশানুরূপ কি না?
আফজাল হোসেন : বেশ সাড়া পাচ্ছি। আমার কাজই হচ্ছে তরুণ লেখকদের উৎসাহিত করা এবং চাহিদা অনুযায়ী বই পাঠকদের হাতে তুলে দেওয়া। আর আমি তা করতে পেরেছি বলে বিশ্বাস। বিক্রির কথা বলতে গেলে মোটামুটি সব ধরনের বই বিক্রি হচ্ছে। যদিও স্টলের বিন্যাসের কারণে অনেকে অনিন্দ্য প্রকাশের স্টল খুঁজে পেতে ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে শুনেছি। স্টল বিন্যাসটা যদি ঠিক থাকত, তবে বিক্রিটা ভালো হতে পারত।
এনটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
আফজাল হোসেন : আপনাকেও।