নতুন বই
এম উমর ফারুকের ‘যে রাতের দিন হয় না’

অমর একুশে বইমেলা ২০১৬ তে প্রকাশিত হয়েছে তরুণ লেখক এম উমর ফারুকের ‘যে রাতের দিন হয় না’। ৬৪ পৃষ্ঠার বইটি পড়ে পাঠক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে পারেন।
সত্য জীবনকাহিনী নিয়ে এগিয়েছে উপন্যাসের প্রেক্ষাপট। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেঘলা, ঘটনার এক পর্যায়ে ঝড়ের মুখোমুখি হয়। তাকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় সমাজ, ভালোবাসার মানুষ, এমনকি জন্মদাতা পিতামাতাও। ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে একপর্যায়ে মেঘলা হয়ে উঠে যৌনপল্লীর বাসিন্দা।
যৌনপল্লীতে থেকেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রবল ইচ্ছে পুষতে থাকে মনের ভেতর। ফিরেও আসে সে এক সময়। বিয়ে করে সংসার শুরু করে। একপর্যায়ে মারা যায় স্বামী। একমাত্র সন্তানও ভুল বুঝে ছেড়ে যায় মাকে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ মেঘলার ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রমে।
বইটি নিয়ে লেখক এম উমর ফারুক বলেন, মানুষের চলমান জীবনের নেপথ্যে লুকিয়ে থাকে নানা ঘটনা। কারো সঙ্গে কারো জীবনের যেমন মিল নেই, তেমনি ঘটে যাওয়া ঘটনারও মিল থাকে না। আর এ ঘটনার জন্য দায়ী থাকে এ সমাজ।
‘এই ঘটনা একটি বাস্তব ঘটনা। প্রবীণ মেঘলাকে জানার অদম্য ইচ্ছায় আমি ছুটে যেতাম বৃদ্ধাশ্রমে। ২০১৩ সালে মেঘলা মারা যান। ঘটনাগুলো বলার সময় তিনি খুব কাঁদতেন, আর বিষণ্ণ হয়ে যেতেন। শেষ বয়সে স্বামীকে ভুলতে পারলেও সন্তানটিকে হারিয়ে ফেলার শোক তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেননি।’
বইটি পাওয়া যাচ্ছে, দেশ পাবলিকেশন্সের ৪০৭ ও ৪০৮ নং স্টলে। প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। বইটির মূল্য-১৪০ টাকা।
কথাসাহিত্যিক এম উমর ফারুক ১৯৯৭ সালে কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলাতে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ২০০৪ সালে চিলমারী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনপ্রাণ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বার্তা সম্পাদক ও পরে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একপর্যায়ে ২০০৫ সালে ঢাকায় দৈনিক যুগান্তরের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এর পর বিভিন্ন দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক মানবকণ্ঠ, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক জনতায় কাজ করেন। সর্বশেষ দৈনিক আজকের পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন।
উপন্যাস ছাড়াও তিনি ছড়া, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, গান ও নাটক লেখেন নিয়মিত। তাঁর লেখা একাধিক নাটক টিভিতে প্রচারিত হয়েছে। তাঁর লেখা গানের বেশ কয়েকটি অ্যালবামও প্রকাশ পেয়েছে।
লেখক ঢাকা রির্পোর্টাস ইউনিটি লেখক সম্মাননা পেয়েছেন। জাতীয় মানবাধিকার পদক-২০১২, হাছন রাজা স্মৃতি স্বর্ণ পদক-২০১০ পেয়েছেন তিনি। চিলমারী পাবলিক লাইব্রেরি লেখক সংবর্ধনা পান তিনি। ছান্দসিক সাহিত্য সেরা কবি ২০০৮ ও বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদ হতে ছান্দসিক কবি পদক-২০০২ লাভ করেন লেখক।