একুশে গ্রন্থমেলায় ‘৩৬শে জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ বই প্রকাশিত

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন, গণহত্যা, জুলাই বিপ্লবের রক্তাক্ত দিনলিপি, সমন্বয়কদের বয়ানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেপথ্যের ঘটনা, জুলাই শহীদদের বীরত্ব গাঁথা, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ কীভাবে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠে, শেখ হাসিনার পলায়ন ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে সাংবাদিক ও গবেষক মুহাম্মদ নূরে আলমের গবেষণামূলক বই ‘৩৬শে জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে।
বইটি প্রকাশ করেছে ৩৬শে জুলাই থিঙ্কট্যাঙ্ক গ্রুপ। বই মেলায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ৯৬২ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে। বইয়ের মূল্য ৫০০ টাকা, তবে মেলা উপলক্ষে ২৫ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া যাবে বইটি।
বইটিতে পাঁচটি অধ্যায় রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নির্মম গণহত্যার ঘটনা ঘটে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে। বইটিতে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পতন, স্বৈরাচার হয়ে ওঠা ও তার পতন-পলায়ন নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। বইটিতে বিচার বহির্ভূত হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ব্যাপক ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও গণহত্যার বর্ণনার রয়েছে বিস্তারিতভাবে। শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা। শেখ হাসিনা ও তার দোসররা কেন গণহত্যার জন্য দায়ীদের বিচার নিয়ে আলোচনা রয়েছে। জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের প্রকৃত মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনা সে সম্পর্কেও বাস্তবধর্মী আলোচনা রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুল আলোচিত আয়না ঘর নিয়েও রয়েছে একটি আলোচনা। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের শপথ গ্রহণ নিয়ে একটি একটি আলোচনা রয়েছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যাকাণ্ড নিয়েও রয়েছে আলোচনা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারতের ভূমিকা ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অযৌক্তিক হস্তক্ষেপ নিয়েও রয়েছে আলোচনা। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতন কি আমেরিকার হাত ছিল কি না তার বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণহত্যার বাস্তবধর্মী ঘটনা নিয়ে বইটি রচিত হয়েছে।
বইটির লেখক সাংবাদিক ও গবেষক মুহাম্মদ নূরে আলম বলেন, ‘৩৬শে জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ একটি বাস্তবধর্মী গবেষণামূলক বই। উত্তাল দিনে ছাত্র আন্দোলনের সময় একজন সংবাদকর্মী হিসেবে যা দেখেছি তাই লিখেছি। অনেক অজানা তথ্য রয়েছে বইটিতে। পাঠকরা বইটি পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারবেন। বইটি পাঠকদের জুলাই্ আগস্টের উত্তাল দিনগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিবে এটি আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।
ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল কাদির বলেন, বইটি জুলাই বিপ্লবের ও গণহত্যার প্রামাণ্য দলিল হবে। এই বইয়ের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম জেন-জি’র বিপ্লব, গণহত্যার বিবরণ এবং শত শহীদের বীরত্ব গাঁথার সম্পর্কে জানতে পারবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সাদিক কায়েম বলেন, ‘৩৬শে জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ বইটিতে পাঠক জানতে পারবে মাত্র ৩৬ দিনে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে কীভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পলায়নে বাধ্য হয়। এ বইটি জুলাই বিপ্লবের প্রামাণ্য দলিল। আগামীতে আর যেন ফ্যাসিবাদ ফিরে আসতে না পারে সেই জন্য এই বইটি পড়ার দরকার।