আগাম বন্যার আশঙ্কায় সুনামগঞ্জের হাওরে রাতেও ধানকাটা শুরু
সুনামগঞ্জে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আগাম বন্যার পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। ২২ থেকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। আগে থেকে হাওরজুড়ে করোনা আতঙ্কে শ্রমিক সংকট তো আছেই। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত ধান কেটে নিতে ১১ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও)নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই আশঙ্কায় নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সুনামগঞ্জের হাওর হাওরে ধানকাটা অব্যাহত আছে। শ্রমিক সংকটের মধ্যেও আগামীকাল শনিবার ২৫ এপ্রিলের মধ্যে হাওরের সব ধানকাটা শেষ করতে রাতেও জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ ধানকাটার উদ্যোগ নিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের জোয়াল ভাঙার হাওরে সদর উপজেলা প্রশাসন রাতে ধানকাটার আয়োজন করে।
রাতে ধানকাটার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদ। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, সদর উপজেলার ইউএনও ইয়াসমিন নাহার রুমা, সদর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ আদনান, সদর কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন টিপু, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র নুরুল ইসলাম বজলু প্রমুখ।
ইউএনও ইয়াসমিন নাহার রুমা বলেন, ‘সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উদ্যোগে ও তাঁর নির্দেশনায় আমরা সদর উপজেলায় রাতেও কৃষক নিয়ে ধানকাটার আয়োজন করি। আপনারা জানেন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই রাতেও যে ধানকাটা যায় সেই উদ্যোগ নিতেই আমাদের এমন আয়োজন। আজকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রাতেও সুনামগঞ্জের হাওরে ধানকাটা শুরু হলো। আমরা কৃষকদের মধ্যে রাতের বেলায়ও ধান কাটার উৎসাহ দেখেছি। সেইসঙ্গে সারা দিন হাওরে ধানকাটা অব্যাহত আছে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ‘কাটলে হাওরে ধান, মিলবে সরকারি ত্রাণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা পুরোদমে জেলায় ধানকাটা শুরু করেছি। প্রথম দিকে শ্রমিক সংকট কিছুটা থাকলেও বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জের হাওরকে অগ্রাধিকার দিয়ে নতুন ৪০টি কমবাইন্ড হারভেস্টার মেশিন উপহার দিয়েছেন। এই ৪০টিসহ মোট ১১২টি মেশিন দিয়ে সব উপজেলায় ধানকাটা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত হাওরে এক লাখ ৬১ হাজার হেক্টর জমির মোট ৬৮ হাজার হেক্টর জমিতে ৪২ ভাগ পাকা ধান কাটা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগাম বন্যার আগেই বেশির ভাগ ফসল কৃষক পাকা ধান কাটতে সক্ষম হবে। সেইসঙ্গে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। বন্যা আসার আগেই যাতে সব ধানকাটা সম্ভব হয় আমরা সেই চেষ্টা করছি। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ছাত্ররাও অংশ নিয়েছে।’
এদিকে সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলায়, বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সামাজিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ছাত্র, কৃষকলীগ, ছাত্রলীগও ধানকাটায় অংশগ্রহণ করছে।