কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বন্দির স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের রক্ষী মামুন হোসেনের বিরুদ্ধে এক বন্দির স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মামুনের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায়। বিবাহিত মামুন কারাগারের ব্যারাকে একাই থাকেন। পাঁচ বছর ধরে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্মরত।
এদিকে, ভুক্তভোগী বন্দি মোহাম্মদ আকাশ রাজশাহী নগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রীর নাম পারভীন আক্তার। তাঁর আট বছর বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে। ১৪ বছর আগে রাজশাহীর বাসিন্দা আকাশের সঙ্গে পরিবারের সম্মতিতে পারভীনের বিয়ে হয়।
পারভীন আক্তারের বড় বোন শিরিন আক্তার বলেন, ‘আকাশ জেলে যাওয়ার পর ওই কারারক্ষীর সঙ্গে পারভীনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। এরপর তারা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। গত কোরবানির ঈদের তিন দিন আগে ওই কারারক্ষীর সঙ্গে পারভীন নিরুদ্দেশ হয়। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম পারভীন স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছে। কিন্তু পরে ফোন করে আমাদের জানিয়েছে, ওই ছেলে (কারারক্ষী মামুন) তাকে জিম্মি করে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছে। তাকে বিয়ে না করেই স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করছে। এ তথ্য পেয়ে আমরা পারভীনকে উদ্ধারের চেষ্টা করি। কিন্তু উদ্ধার করতে পারিনি। এ নিয়ে মামলার কথা ভাবছি আমরা।’
পারভীনের স্বামী আকাশ বলেন, ‘আমি ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করতাম। সেখান থেকে ফেরার পথে নগর ডিবি পুলিশ আমাকে সন্দেহভাজন মাদক কারবারি হিসেবে তুলে নিয়ে যায়। ওই সময় আমার কাছে টাকা দাবি করে পুলিশ। কিন্তু আমি তাদের দাবি পূরণ করতে না পারায় আমাকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়। বন্দি থাকাকালীন কারারক্ষী মামুন হোসেনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমার স্ত্রীর মোবাইল ফোন নম্বর কারারক্ষী মামুনকে দেই। আমার স্ত্রীর ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে আমাকে দেওয়ার অনুরোধ করি। এরপর পারভীনের সঙ্গে মামুন পরকীয়া শুরু করে। একপর্যায়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের গোপন ভিডিও ধারণ করে আমার স্ত্রীকে জিম্মি করে সে। আমার মাদক মামলায় যাবজ্জীবন হবে বুঝিয়ে আমার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। পরে আমাকে তালাক দিতে বাধ্য করে।’
ভুক্তভোগী আকাশ আরো অভিযোগ করেন, ‘কয়েকদিন ধরে বিষয়টি জানাজানি হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাদক মামলায় আমাকে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছে কারারক্ষী মামুন। এখন আমি নগরীর নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতে দোকান করি। দোকানে মাদক রেখে ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে মামুন। এরপর থেকে আমি দোকান বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’
এ ঘটনার প্রতিকার ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন ভুক্তভোগী আকাশ।
এদিকে, আকাশের স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের বিষয়টি স্বীকার করেন কারারক্ষী মামুন হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওই নারীর সঙ্গে আমার কোনো অনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমি বিবাহিত। আমার সংসার আছে। আমি এমনটি করতেই পারি না।’
ওই নারীকে স্বামীর কাছ থেকে ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেন কারারক্ষী মামুন হোসেন।
এ বিষয়ে জানতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও রাজশাহীর সিনিয়র জেল সুপার গিয়াস উদ্দিন ও জেলার মাসুদুর রহমানের মোবাইল ফোনে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে এ নিয়ে তাঁদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।