কৃষকের বাড়ি গিয়ে ধান কেনার কার্যক্রম শুরু করালেন মাশরাফী

নড়াইলে কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য দিতে সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা চালু করেছিলেন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা কর্মসূচি।
আর এ বছর করোনা মহামারির কারণে কৃষককে ধান বিক্রি করতে কোথাও আসা লাগবে না, কৃষকের বাড়িতে ট্রাক নিয়ে গিয়ে ধান কিনবে জেলার খাদ্য বিভাগ।
এ বছর নড়াইলে এমনই অভিনব কার্যক্রম শুরু করিয়েছেন সাংসদ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।
এমন কার্যক্রম কৃষকদের কাছে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও কার্যকর পদ্ধতি বলে প্রশংসিত হয়েছে। কৃষকের ধান বিক্রি সহজীকরণে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা রাজনৈতিক-সামাজিক নেতৃবৃন্দ, জেলা প্রশাসন ও কিছু কৃষকের সঙ্গে আলোচনা করে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য অফিসকে অনুরোধ করেছেন, কৃষকের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ধান কিনতে।
এ ক্ষেত্রে যাবতীয় পরিবহন খরচ সাংসদ মাশরাফী নিজেই বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে জেলার খাদ্য বিভাগ নির্বিঘ্নে কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে ধান ক্রয় করছে। আর বাজারের দামের সঙ্গে সরকারি দামের তারতম্য না থাকায় কৃষকরা উৎসাহ নিয়ে কষ্ট করে ফলানো ধান আনন্দের সঙ্গে বিক্রি করছেন।
চলমান করোনা মহামারিতে বাড়িতে বাড়িতে গাড়ি পাঠিয়ে ধান কেনার পদ্ধতি চালু করায় কৃষক কোহিনুর রহমান সাংসদ মাশরাফীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে আমরা যে সোনার ধান ফলাই, সরাসরি আমাদের কাছ থেকে ধান কেনায় আমরা আজ লাভবান হচ্ছি। আমাদের কষ্ট আজ সার্থক হয়েছে।’ করোনার কারণে ধান বিক্রি ও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের যে শঙ্কা ছিল, তাও দূর হয়েছে বলে জানান এই কৃষক।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা আমাদের দুটি ট্রাক দিয়েছেন, যা নিয়ে গতকাল আমরা নড়াইল পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে যাই। যেখান থেকে কৃষক কোহিনুর রহমান, বিন্দু রহমান ও আরতি দাসের কাছ থেকে এক টন করে ধান ক্রয় করি এবং ওইখানেই তাদের হাতে ২৬ হাজার টাকার চেক প্রদান করি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ০১৯১২৬৯৬৯৩১ এই নম্বরে বা সরাসরি খাদ্য অফিসে যোগাযোগের অনুরোধ করছি। তাহলে আমরা তার বাড়িতে গিয়ে ধান কিনে আনব।’
নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নিজামউদ্দিন খান নিলু বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সারা দেশে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে।’ আর করোনার মধ্যেও নড়াইলে ধান কেনার এমন অভিনব কার্যক্রম চালু করায় সাংসদ মাশরাফীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
করোনা পরিস্থিতিতে কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ধান কেনার এই পদ্ধতি অনুসরণে দেশের সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানান জেলা আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা জানান, ধানের বর্তমান বাজারমূল্য ৯০০ থেকে এক হাজার ৫০ টাকা। আর সরকার নির্ধারিত মূল্য এক হাজার ৪০ টাকা। ফলে বাড়িতে গিয়ে এক হাজার ৪০ টাকা দিয়ে ধান কেনায় কৃষকরা অনেক আনন্দিত। কৃষকদের ধান বিক্রি সহজীকরণে ও সার্বিক সহযোগিতার জন্য তিনি সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাকে ধন্যবাদ জানান।