খুলনায় করোনা আক্রান্ত নেই, বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান

‘খুলনায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়নি। সবকিছু বন্ধ থাকায় যারা কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন হলে সরকারের সব কাজে সমন্বয় করা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।’
খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সার্কিট হাউজে করোনা পরিস্থিতি, কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণ বিতরণ বিষয়ে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খুলনা সিটি মেয়র বলেন, ‘খুলনা সিটি করপোরেশনে ১৬ লাখসহ জেলায় মোট ২৪ লাখ মানুষের বসবাস। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এসব মানুষের নিয়মিত খোঁজখরব নেওয়া হচ্ছে। জাতির এই ক্রান্তিকালে সাংবাদিকরা যদি দায়িত্বশীল হয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করেন তাহলে সমন্বয় করে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘খুলনা জেলার জন্য এরমধ্যে ৮০০ মেট্রিক টন চাল এবং ৪১ লাখ নগদ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিন লাখ টাকা শিশুখাদ্যের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এর সঙ্গে স্থানীয় মজুদ যোগ করে এরইমধ্যে ৯৫০ মেট্রিক টন চাল ও ১৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এসব সাহায্য জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিতরণ চলছে।’
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘সাধারণ রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য একটি অনলাইন সেবা চালু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেটা দু-একদিনের মধ্যেই চালু হবে।’
এ সময় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মো. রেজা সিকান্দার বলেন, ‘খুলনায় দুদিন হলো করোনাভাইরাস টেস্ট শুরু হয়েছে। এ দুদিনে ৩৪টি নমুনার মধ্যে কোনো করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়নি। খুলনা ডায়াবেটিক হাসপাতাল এরই মধ্যে করোনভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে চারটি ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ ১০০টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
ডা. মুন্সী মো. রেজা সিকান্দার আরো বলেন, ‘এরমধ্যে ৭০ জন চিকিৎসক এবং ৪২ জন নার্সের সমন্বয়ে চিকিৎসার দল গঠন করা হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফ্লু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। এখানে করোনাভাইরাস সন্দেহ বা শনাক্ত হলে তাদের ডায়াবেটিক হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হবে। চিকিৎসকরা নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে অবস্থান করবেন। রোগীদের আইসোলেশনের জন্য অ্যাম্বাসেডর এবং মিলিনিয়াম হোটেল দুটো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
খুলনায় এক হাজার ৯৫০ জনের মধ্যে এরইমধ্যে এক হাজার ৮৩৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত করা হয়েছে। ১৭ জন আইসোলেশনে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কেএমপির বিশেষ পুলিশ সুপার শাকিল আহমেদ, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা ম. জাভেদ ইকবাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জিয়াউর রহমান, প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।