খুলনায় ত্রাণের জন্য শ্রমিকদের বিক্ষোভ

খুলনার রূপসা উপজেলায় ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে কিছু শ্রমজীবী মানুষ। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে এসব মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। উপজেলার পূর্ব রূপসা বাজারের পাশের আদর্শগলিতে শত শত নারী-পুরুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। এদের বড় অংশই স্থানীয় মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করে বলে জানা গেছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে বাজারের বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল করতে করতে শ্রমিকরা পূর্ব রূপসা বাসস্ট্যান্ড ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নেয়।পরে তারা খুলনা-মোংলা সড়কে সেনাবাহিনীর টহল গাড়ি পেয়ে তাদের কাছে দাবি তুলে ধরে।
শ্রমিকরা দাবি করে, এলাকার প্রতিটা মানুষ ঘরে থাকলেও তাদের কাছে এখনো পর্যন্ত কোনো ত্রাণ বা খাদ্য আসেনি। মেম্বার-চেয়ারম্যানদের কাছে বললেও তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এলাকার নেতারাও খোঁজ নিচ্ছেন না। অনেক পরিবারই অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন।
শ্রমিকরা আরো জানান, তারা মালিকের কাছ থেকে বেতন পাচ্ছেন না। আবার করোনার কারণে ঘর থেকেও বের হতে পারছেন না। হাতে কাজ নেই। অথচ টিভিতে দেখছেন, প্রধানমন্ত্রী গরিব মানুষকে সহায়তা পাঠিয়েছেন। সরকার ১০ টাকা কেজি করে চাল দিচ্ছিল তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা।
এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা শান্ত হন।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন বুলবুল বলেন, ‘কর্মহীনদের জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ পাচ্ছি তা দিয়ে কিছুই হচ্ছে না। এলাকায় ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার কাছে বিতরণের জন্য অল্প কিছু চাল আছে, দেখি তা দিয়ে কতদূর কী করতে পারি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন আক্তার বলেন, ‘রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নে চার থেকে পাঁচ হাজার মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার শ্রমিক রয়েছেন। একটা কোম্পানি ছাড়া বাকি কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের এখনও বেতন দেয়নি। আমি মালিকপক্ষের সঙ্গে বেশ আগে থেকে কথা বলেছি। ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছি যাতে শ্রমিকদের বেতন সময়মতো দেওয়া হয়।’
ইউএনও আরো বলেন, ‘রূপসা একটি বিশাল জনবসতিপূর্ণ এলাকা। এখানে সরকারি সহযোগিতার চাল এসেছে ৬১ টন। যা মাত্র সাত হাজার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র পূর্ব রূপসার নৈহাটী ইউনিয়নেই নিম্ন আয়ের শ্রমিক রয়েছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার।’
শ্রমিকদের বিক্ষোভের বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান ইউএনও।