ঘটনাস্থলে বস্ত্রমন্ত্রী, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ গ্রুপের কারখানা পরিদর্শন করেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। এ সময় তিনি শ্রমিক নিহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ আদায়ের ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে এই কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এখন পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনজন এবং আজ শুক্রবার দুপুরের পর আরও ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অর্ধশত।
আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। কারখানাটি মন্ত্রীর নির্বাচনি এলাকার মধ্যে। পরিদর্শন শেষে তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, ‘যার মরে সেই শুধু বোঝে যে কত ক্ষতি হয়েছে। সুতরাং মালিকপক্ষকে নিয়ে বসে মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে কী পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় সে ব্যবস্থা করা হবে।’
গোলাম দস্তগীর গাজী আরও বলেন, ‘এখানে যারা মালিকপক্ষ আছেন তাদের সঙ্গে আমি কথা বলল। কথা বলে এমন একটা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে যাতে শ্রমিকপক্ষ খুশি থাকে। যেহেতু আমিও রূপগঞ্জের একজন শিল্পগোষ্ঠীর সদস্য। সুতরাং আমরা সবাই মিলে বসে একটা ব্যবস্থা করব। যাতে মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা ভালোভাবে চলতে পারে।’
এদিকে আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন জানান, কী কারণে আগুন লেগেছে তা তদন্তের পর জানা যাবে। ধ্বংসস্তুপের ভিতরে আরও লাশ থাকতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। আরেফিন আরো জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ছয়তলার কিছু কিছু জায়গায় আগুন জ্বলছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে আগুন লাগার পরপরই মিনা আক্তার (৪০) ও স্বপ্না রানী নামে দুই শ্রমিকের লাশ কারখানা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে মুরসালিন (২২) নামে এক কর্মী রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি আগুন লাগার পর তিনতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়েছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন লাগার পর পরই গোটা ভবনে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে ঢামেক হাসপাতালে এবং ১৬ জনকে রূপগঞ্জ ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।