জিয়াউর রহমানের খেতাব দয়ার দান নয়, অর্জন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/02/17/du.jpg)
মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বীর উত্তম বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এই কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। মানববন্ধনে জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ভূমিকার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
সভাপতির বক্তব্যে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘এই খেতাবটি দিয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার। জামুকার দায়িত্ব ছিল এ দেশের মানুষের সঠিক তালিকা তৈরি করা, মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন করা। ইতিহাস বিকৃত করার কারণে যারা জিয়াউর রহমানকে ভুলতে বসেছিল, সেই প্রজন্ম আজ জেগে উঠেছে জিয়াউর রহমানকে জানার জন্য।’
‘বর্তমান সরকারকে বলব, আপনারা জামুকার এই সুপারিশে কর্ণপাত করবেন না। যদি করেন আজ যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জেগে উঠেছে, তেমনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জেগে উঠবে’, যোগ করেন অধ্যাপক লুৎফর রহমান।
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধের খেতাব কারো দয়ার দান নয়, এটা তাঁর অর্জন। মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ অবদান রেখেই তিনি এই খেতাব অর্জন করেছেন। যথার্থভাবেই বাংলাদেশ সরকার তাঁকে মূল্যায়িত করেছে। এই খেতাব বাতিলে জামুকার আইনগত কোনো এখতিয়ার নেই।’
ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জননন্দিত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যিনি দেশের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। তাঁর রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এক দীর্ঘ পরিক্রমায় নানা ঘটনার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা পেয়েছি। আজ দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে চলেছি। কিন্তু আমাদের সেই স্বাধীনতার চেতনাকে কলঙ্কিত করার অপচেষ্টা হচ্ছে জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে।’
ঢাবির এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘দেশের ক্ষমতাসীনদের সীমাহীন দুর্নীতি নিয়ে যখন আল জাজিরায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলো সেটাকে চাপা দিতেই জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সংগঠনের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানে হচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা। তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, জেড ফোর্সের অধিনায়ক ছিলেন।’
এসব করে কোনো লাভ হবে না উল্লেখ করে ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো লাভ নেই এসব করে। জিয়াউর রহমানের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, বিএনপির প্রতি ভালোবাসা আছে থাকবে। কাগজে নয়, খোদাই করে নয়, জিয়াউর রহমানের নাম সবার হৃদয়ে আছে। এই কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ান, সঠিক ইতিহাস চর্চা করুন। না হলে আগামীতে আপনাদের খেসারত দিতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক হাসানুজ্জামান বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ যার হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল, যিনি একাধিক, যার নামে একটি ফোর্স ছিল। আল জাজিরার প্রতিবেদন যাতে মাটিতে মিশে যায়, সাংবাদিকরা যাতে এই বিষয় বাদ দিয়ে জিয়াউর রহমানের ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করে সেজন্যই এই বিষয়টি এখন তোলা হয়েছে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন খান, অধ্যাপক এ বি এম শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. আল আমিন প্রমুখ।