ত্রাণ নিতে গিয়ে থাপ্পরে বৃদ্ধের মৃত্যুর অভিযোগ, তদন্ত কমিটি

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নে ত্রাণ নিতে গিয়ে জুলমত আলী (৬০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে চরআলগী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টেকিরচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জুলমত আলী টেকির চর গ্রামের বাসিন্দা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ’শুনেছি ত্রাণ নিতে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে কীভাবে ঘটেছে তার কারণ অনুসন্ধানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ঘটনার কারণ বলা যাবে। এর আগে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
তবে ত্রাণ নিতে আসা স্থানীয়দের ভাষ্য, করোনা দুর্যোগে কর্মহীন দরিদ্রদের মধ্যে চরআলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান ওরফে ডলার মাসুদ ত্রাণ বিতরণ করতে যান। সেখানে বৃদ্ধ জুলমত আলীও ত্রাণ সাহায্য চান। কিন্তু তালিকায় নাম না থাকায় চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে তাঁকে ধমক ও থাপ্পার দিয়ে লাইন থেকে সরিয়ে দেন। এ সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা জাহাঙ্গীর ও শাহজালালসহ অন্যরাও ওই বৃদ্ধকে গালিগালাজ করে গলাধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে আঘাত লেগে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলেই জুলমত আলী মারা যান।
এ ঘটনায় চরআলগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান ওরফে ডলার মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ত্রাণ দিয়ে চলে আসার পর শুনেছি একজন স্ট্রোক করে মারা গেছেন। উনিও ত্রাণ পেয়েছেন।’
তবে ধমক ও থাপ্পর দেওয়ার কথা জানতে চাইলে চেয়ারম্যান উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘করোনার সময়ে কেউ কি কারো গায়ে হাত দেয়?’
ঘটনার বিষয়ে গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অনুকূল সরকার সাংবাদিকদের বলেন, `শুনেছি একজন ত্রাণ নিতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছেন। আমি অসুস্থ, এর বেশি কিছু জানতে পারিনি।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গফরগাঁও সার্কেল ) আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘মৃত্যুর বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় এরমধ্যে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’