নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে পুলিশের নির্যাতনে উজির মিয়া নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে নিহত উজির মিয়ার ভাই ডালিম মিয়া বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদারের আদালতে এই মামলা করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে শান্তিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ সূত্রধর ও এসআই আলাউদ্দিনকে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রুকেশ লেইস।
অ্যাডভোকেট রুকেশ লেইস বলেন, উজির মিয়াকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে আমরা আদালতে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। পুলিশ কিংবা উচ্চ পর্যায়ের যেকোনো কর্মকর্তা হোক, আইন সবার জন্য সমান। আশা করি উজির মিয়ার পরিবার ন্যায় বিচার পাবে।
নিহত উজির মিয়ার ভাই মামলার বাদী ডালিম মিয়া বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে চোর অপবাদ দিয়ে অহেতুকভাবে ধরে নিয়ে পুলিশ নির্যাতন করেছে। আজকে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আশা করি, ন্যায়বিচার পাব।
এর আগে গতকাল রোববার উজির মিয়াকে নির্যাতনের অভিযোগে শান্তিগঞ্জ থানার এসআই দেবাশীষ সূত্রধরকে ক্লোজড করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
উজির মিয়াকে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রেপ্তারের সময় দেবাশীষ সূত্রধর ও তখনকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন, এসআই পার্ডন কুমার সিংহ, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আক্তারুজ্জামানসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এই পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উজির মিয়াকে মারধরের অভিযোগ তুলেছে নিহত উজির মিয়ার পরিবার। গ্রেপ্তারের সময় এসআই দেবাশীষ উজির মিয়ার মাথায় আঘাত করেছেন বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা গ্রামে একটি গরু চুরি হয়। সেই চুরির মামলায় আসামি করা হয় একই উপজেলার পাগলা এলাকার শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়াকে। ওই দিন রাতেই তাকে ধরে নিয়ে থানায় নির্যাতন করা হয়। উজির মিয়া গুরুতর আহত হলে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পরের দিন তাকে আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাকে জামিন দেন। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি জামিনের পর পরই তাকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২১ ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়। এরপর পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে মানববন্ধন করতে চাইলে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িতে করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে আসেন। বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গাড়িতে হামলা করতে চাইলে চালক দ্রুত লাশের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যান। এতে আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে সড়কে অবস্থান নেয় এলাকাবাসী।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শান্তিগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীকে ন্যায়বিচারের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেয় তারা।