গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিসহ চার জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিয়োগ দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়টির সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটির সদস্য এবং ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোশারফ আলী, সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগ কমিটির সদস্য এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মান্নান ও সেকশন অফিসার শারমিন চৌধুরী।
তাদের বিরুদ্ধে সেকশন অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগে ১৬টি শূন্য পদের জায়গায় ২০ জনকে নিয়োগ ও ডাটা শিটে নাম ছিল না এমন একজনকে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রোববার (২ মার্চ) গোপালগঞ্জে দুদকের জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। রোববার দুপুরে দুদক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান। গত ৯ জানুয়ারি নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালায় দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রশাসনিক কর্মকর্তা/সেকশন অফিসারের ১৬টি পদসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১৬টি শূন্য পদের স্থলে আসামি শারমিন চৌধুরীসহ ২০ জনকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা/সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ পদে ৮৭০ জন আবেদনকারীর ডাটা শিট যাতে তৎকালীন ভিসি ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের স্বাক্ষর রয়েছে বলে দুদক জানায়।
ওই ডাটা শিট পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, ওই তালিকায় আসামি শারমিন চৌধুরীর নাম নেই। তাছাড়া নিয়োগ কমিটির সুপারিশে তালিকার ৮৭৩ নম্বর ক্রমিকের শারমিন চৌধুরীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলেও বাস্তবে ৮৭৩ নম্বর ক্রমিক ডাটা শিটে নেই। অর্থাৎ আবেদন তথা তালিকায় না থাকার পরও জাল-জালিয়াতি করে তাকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে প্রার্থীর বয়স ৩২ বছর হওয়ার কথা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে আসামি শারমিন চৌধুরী বয়স ৩২ বছরের বেশি ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয় ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। অন্যদিকে শারমিন চৌধুরির জন্ম ১৯৮৫ সালের ২০ জুন। অর্থাৎ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখে তার বয়স ৩৩ বছর ৩ মাস ছিল। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আসামি শারমিন চৌধুরী বয়স ৩২ বছরের স্থলে ৩৩ বছর ৩ মাস থাকার পরও বেআইনিভাবে নিয়োগ, বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ১৬টি শূন্যপদের স্থলে ২০ জনকে নিয়োগ ও ডাটা শিটে নাম না থাকার পরও নিয়োগ দিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।