পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে নাশকতার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই : র্যাব

র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের হামলা বা নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।’
আজ বুধবার সেতুর দুই প্রান্তে র্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন এবং শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্ত ও মাদারীপুরের সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে র্যাবের ডিজি এ মন্তব্য করেন।
বহুল আলোচিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ২৫ জুন। পদ্মার ওপারে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজনে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য বিশেষ সতর্ক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের নাশকতা বা হামলা মোকাবিলায় সেতুর দুই প্রান্তেই র্যাবের স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রস্তুত রাখা হয়েছে র্যাব এয়ার উইংয়ের হেলিকপ্টার।’
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ভিআইপি স্পিডবোট ঘাটে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের হামলা বা নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বাড়ানোর মাধ্যমে জঙ্গিদের যে কোনো ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।’
বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে সার্ভিস এরিয়া-১ ও সার্ভিস এরিয়া-২ ও পাশের এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং সেতুর নিরাপত্তা জোরদার করতে দুই প্রান্তেই পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে।’
সমাবেশস্থল, টোল প্লাজা, ফলক উন্মোচন ও হেলিপ্যাড এলাকার নিরাপত্তার লক্ষ্যে র্যাবের প্রয়োজনীয় সংখ্যক টহল মোতায়েন থাকবে। অনুষ্ঠান চলাকালীন সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, আশপাশের এলাকায় পেট্রোল, মোটরসাইকেল পেট্রোল, ফুট পেট্রোল, বোট পেট্রোলিং, অবজার্ভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে বলেও জানান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সেতুর দুই প্রান্ত, সমাবেশস্থলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র্যাবের বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং সম্পন্ন করা হবে। র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট যে কোনো উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে।
যেকোন প্রয়োজনে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সেতুর দুই প্রান্তেই র্যাবের মেডিকেল টিম নিয়োজিত থাকবে। সেতুর দুই প্রান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করবে।
দুই প্রান্তে পদ্মা সেতুর প্রবেশ স্থান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে র্যাবের চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে আগত যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হবে।
ভার্চুয়াল জগতে পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে যেকোন ধরনের গুজব, উসকানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে। র্যাব সদর দপ্তর সার্বিক কার্যক্রম সার্বক্ষণিকভাবে মনিটর করবে।