পশুর হাটে বিগ বসের দাম ৩০ লাখ, চাঁপাই সম্রাট ২৫
কিশোরগঞ্জের ‘বিগ বস’। ওজন প্রায় ৪৪ মণ। গত মঙ্গলবার তাকে ওঠানো হয়েছে গাবতলী হাটে। গম্ভীর স্বভাবের। ঘাড় নেড়েচেড়ে দেখছে দর্শনার্থীদের। তাদের মধ্যেই হয়তো মিলে যাবে বিগ বসের ক্রেতা। এই হাটে এটাই সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি তার মালিক মোশিদ মিয়ার।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মোশিদ মিয়ার সঙ্গে এনটিভি অনলাইনের কথা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত গরুটি কেউ কেনার জন্য আসেনি। সবাই এসে দাম জানতে চেয়ে চলে যাচ্ছে। আমি ৩০ লাখ টাকা দাম চাচ্ছি।’ যদিও কিছুটা কম হলেও ছেড়ে দিতে চান তিনি। তাঁর মতো আরও অনেকেই হাঁকানো দামের থেকে কমেই পশু বিক্রি করতে চাইছেন। তাদের ভাষ্যে—লোকজনের তুলনায় ক্রেতা কম। অনেকেই আসছেন ভিডিও করতে। দাম জানতে চাইছেন। তারপর চলে যাচ্ছেন। এদিকে, গো-খাদ্যের দাম বাড়তি। তাই তাঁরা পশু বেচে ফিরে যেতে চান।
বিগ বসের মালিক মোশিদ মিয়া জানান, গরুটির নাম ‘কিশোরগঞ্জের বিগ বস’ দিয়েছেন তিনি। গাবতলীর একেবারে মূল সড়কের পাশের খাটালে রাখা গরুটি। তাকে যত্নের শেষ নেই। গরম থেকে স্বস্তি দিতে চালিয়ে রাখা হয়েছে টেবিল ফ্যান।
মোশিদ মিয়া বলছিলেন, ‘আমার গরুটি ছয় ফিট উঁচু। লম্বায় ১০ ফিট। ওজন সাড়ে ১৭০০ কেজি। প্রায় ৪৪ মণ ওজন। আজ বৃহস্পতিবার থেকে ক্রেতা বেশি আসবে বলে শুনেছি। কিছুটা কম পেলেও গরুটিকে ছেড়ে দেবো।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে একইদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার নিয়ে আসা হয়েছে ‘চাঁপাই সম্রাট’কে। গরুটির মালিক জুলফিকার আলী এ নাম দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চাঁপাই থেকে ঢাকায় আসা সবচেয়ে বড় গরু এটা। তিনি গরুটির দাম হাঁকাচ্ছেন ২৫ লাখ টাকা।’
জুলফিকার আলী বলছিলেন, ‘সাড়ে তিন বছর বয়স গরুটির। এখন পর্যন্ত কেউ কিনতে আসেনি গরুটি।’
জুলফিকারের দাবি, তাঁর চাঁপাই সম্রাট গাবতলী পশুর হাটের দ্বিতীয় বড় গরু। তিনি বলেন, ‘আশা করছি আজ বিকেল থেকে ক্রেতা বেশি আসবে। ১৫ লাখ থেকে ১৭ লাখ টাকার মধ্যে হলে ছেড়ে দেব।’
মেহেরপুর থেকে একটি গরু নিয়ে এসেছেন আসমা আক্তার ও তাঁর স্বামীসহ মোট পাঁচজন। আসমার দাবি, গরুটি বড় হওয়ায় আনতে যদি কোনো ঝামেলা হয়, সেজন্য পাঁচজন আসা।
পাঁচজনই গরুর দেখভাল করতে ব্যস্ত। কেউ হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছেন। কেউ শরীর মুছে দিচ্ছে। কেউবা আবার গরুর শুয়ে থাকার স্থান পরিষ্কার করছেন। তাঁরা পাঁচজনই গরুর পাশে দিনে-রাতে পালাক্রমে সেবা করছেন।
আসমার দাবি, ‘এই একটি গরুই তিনি বাড়ির গোয়ালে রেখে লালন-পালন করেছেন। গোয়ালে মোট চারটি ফ্যান লাগানো। তার মধ্যে একটি আবার ব্যাটারিচালিত। বিদ্যুত চলে গেলে এ ফ্যানটি চালু করা হয়।’
আসমা বলছিলেন, ‘গরুটি নিয়ে এসেছি সেই গত শনিবার। এখানে প্রচণ্ড গরম। হাত পাখা দিয়ে সারাদিন-রাত বাতাস করতে হচ্ছে। না হলে গরু হাঁফিয়ে উঠছে। এর মধ্যে কেউ এসে দামও বলছে না। সবাই শুধু ভিডিও করতে আসে। ভিডিও হয়, ছবি তোলা হয়। কিন্তু, কিনতে আসে না কেউ।’
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মো. আব্দুল জব্বার। তিনিসহ মোট চারজন মিলে ছাগলের ব্যবসা করেন। গাবতলীর হাটে গিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কথা হয় জব্বারের সঙ্গে। তাঁর দাবি, ‘এখন হাটে আমাদের (চার জন) ৫০০ ছাগল আছে। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছি ৩০০ থেকে ৪০০টি। গতকাল সবচেয়ে বড় ছাগলটি বিক্রি করেছি এক লাখ ১০ হাজার টাকায়। একটু আগে দুই গাড়ি ছাগল এসেছে। আরও আসবে। প্রতিদিন ছাগল আসে। বিক্রি হয়ে যায়। ব্যবসা ভালোই চলছে।’