পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/01/02/paahaarri-kphi-thaam.jpg)
পাহাড়ে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে দীর্ঘ দুই যুগ আগে শুরু করা কফি চাষ সাড়া জাগাচ্ছে। কফি চাষীদের আগ্রহে বাণিজ্যিক উৎপাদনে বান্দরবানে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন অনেকে। পাহাড়ে উৎপাদিত অ্যারাবিকা ও রোবাস্টা দুই জাতের কফি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে ১৯৯৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় ৬০০ কৃষক পরিবারকে পুনর্বাসনের প্রকল্প হাতে নেওয়ার মাধ্যমে সীমিত আকারে কফি চাষ শুরু হয় পাহাড়ে। দীর্ঘ তেইশ বছর পর পাহাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে সাড়া জাগাচ্ছে কফি চাষ। বর্তমান বান্দরবান জেলায় হাজারো চাষী কফি চাষের সঙ্গে জড়িত।
চলতি বছর জেলায় ২৮০ হেক্টর জমিতে কফি চাষ হয়েছে। যা গতবছরের তুলনায় ১৩৪ হেক্টর বেশি। গতবছর উৎপাদন হয়েছিল ৯০ মেট্রিকটন কফি। এবছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২০ মেট্রিক টনের বেশি। ছয়টি উপজেলায় ৬৫টি বাণিজ্যিক প্রদর্শনী বাগান রয়েছে। এখানে উৎপাদিত কফি চামড়া (খোসা) বাদ দিয়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকায়। খোসাসহ কফি বিক্রি হচ্ছে হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তবে, মান ভালো হলে খোসা ছাড়া কফি কেজিতে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। পাহাড়ে উৎপাদিত কফি রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। স্থানীয় সফল চাষী এ্যাম্পু পাড়ার মেনরু ম্রো ও সাক্য ম্রো বলেন, ‘গতবছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো হয়েছে। এতে বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যাবে। তবে, কিছু গাছে পোকার আক্রমণে ক্ষতি হয়েছে।’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/01/02/paahaarri-kphi-inaar.jpg)
স্থানীয় উদ্যোক্তা সিইয়ং খুমী বলেন, ‘চারা রোপণের তিন বছরের মাথায় কফি উৎপাদিত হয়। একেকটা কফি গাছ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। কিন্তু শুরুর দিকে অনেক চাষী আগ্রহ দেখায়নি। লাভ হবে না ভেবে চারা লাগিয়েও পরিচর্যা করেনি। তবে, পরিস্থিতি বদলে গেছে। চাষীদের আগ্রহে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ বাড়ছে। কফি উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উৎপাদিত কফির প্রক্রিয়াজাতকরণে ছোটখাট কারখানা করা গেলে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে।’
এ বিষয়ে বান্দরবান হর্টিকালচার সেন্টারে উপপরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মদ সিদ্দিকী বলেন, ‘ইতোমধ্যে হর্টিকালচার সেন্টারে উন্নতমানের কফি প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। কফি চাষের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যোগে বান্দরবান সদর, লামা, নাইক্ষ্যংছড়ি, রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি ছয়টি উপজেলায় তালিকাভুক্ত চাষীদের নতুন করে দেড়শটি করে কফির চারা বিতরণ করা হয়েছে। লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় কফি চারার নার্সারি গড়ে তোলা হয়েছে।’