বাগেরহাটে শিশুকে ধর্ষণ মামলায় মাদ্রাসা সুপারের যাবজ্জীবন

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস জোমার্দ্দারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২-এর বিচারক মো. নুরে আলম আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।
মামলার একমাত্র আসামি মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস জোমার্দ্দার (৪৮) উপজেলার পূর্ব রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ইলিয়াস জোমার্দ্দারের কাছে চারজন শিশু পড়তে আসে। এ সময় তিনি কৌশলে তিনজনকে ছুটি দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে থাকতে বলেন। পরে শিশুটিকে লাইব্রেরিতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ওই শিশু বাড়িতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি তার মাকে বলে। এরই মধ্যে মাদ্রাসা সুপার ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে ওর গায়ে বাতাস লেগে রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে জানান এবং পানিপড়া দেন। পরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে মোড়েলগঞ্জের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করে।
১৯ আগস্ট রাতে শিশুটির বাবা ভ্যানচালক রফিক হাওলাদার বাদী হয়ে মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ইলিয়াস জোমার্দ্দারকে একমাত্র আসামি করে শরণখোলা থানায় মামলা করেন। ২২ আগস্ট ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
এদিকে, ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তভার দেওয়া হয়। ১৭ অক্টোবর আসামি মাওলানা ইলিয়াস জোমার্দ্দারকে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২০ অক্টোবর অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাইয়্যেদ। ২০২০ সালের ৯ মার্চ বিচার কাজ শুরু হয়। করোনার কারণে একটু বিলম্বে ২৮ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে বাদীপক্ষের ১৫ জন ও আসামিপক্ষের দুজন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
২৯ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে আজ বৃহস্পতিবার মামলাটি রায় হয়।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে রণজিত কুমার মণ্ডল ও আসামিপক্ষে আলী আকবর আইনজীবী হিসেবে ছিলেন।