বাগেরহাট, পাবনা ও দিনাজপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজন নিহত

বাগেরহাট, পাবনা ও দিনাজপুরে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন সময়ে এসব ‘বন্দুকযুদ্ধে’র ঘটনা ঘটে।
ঢাকার বাইরে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
আবু হোসাইন সুমন, মোংলা : বাগেরহাটের মোংলা উপজেলায় সুন্দরবনে জলদস্যুদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এক দস্যু নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে র্যাব। এ সময় দুই র্যাব সদস্যও আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়।
র্যাব ৬-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রওশন ফিরোজ জানান, পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কোদালিয়া খালে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে জেলেদের জিম্মি করে একদল দস্যু বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করছিল, এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় অভিযান চালান। অভিযানের একপর্যায়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে র্যাব সদস্যরা কোদালিয়া খাল এলাকায় পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া দস্যুরা গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে র্যাব সদস্যরাও গুলি চালান। উভয়পক্ষের মধ্যে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলা বন্দুকযুদ্ধের একপর্যায়ে এক দস্যু গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় বাকি দস্যুরা বনের গহীনে পালিয়ে যান। গুলিবিদ্ধ ওই দস্যুকে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তবে এ ঘটনায় নিহত দস্যু ও দস্যু বাহিনীর নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি র্যাব।
র্যাবের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি পাইপগান, কয়েকটি রামদা ও বেশ কয়েকটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির লাশ এবং উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও গুলি মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে র্যাব।
এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা : পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় গতকাল দিবাগত রাতে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, নিহত ব্যক্তি আন্তজেলা ডাকাতদলের সর্দার এবং হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
নিহত ব্যক্তির নাম সরোয়ার ওরফে সরো ওরফে শাহীন আলম ওরফে আশিক (৩৬)। তিনি উপজেলার পুণ্ডুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, সাঁথিয়া উপজেলার শামুকজানি বাজারে ডাকাতির উদ্দেশে একদল ডাকাত গোপন বৈঠক করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে দিবাগত রাত ২টার দিকে পাবনা ডিবি ও সাঁথিয়া থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে যায়।
এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গোলাগুলির একপর্যায়ে ডাকাতদল পিছু হটে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সরোয়ার ওরফে আশিককে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি বন্দুক, একটি কার্তুজ, একটি ছুরি ও এক জোড়া স্যান্ডেল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জাহিদুল ইসলাম, হিলি : দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মিরপুর এলাকায় আজ ভোরে বন্দুকযুদ্ধে মো. ফেরদৌস ফাহিম নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ বলছে, নিহত ফাহিম মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি উপজেলার আওলাকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ আরো দাবি করে, বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, তিনটি গুলি ও গুলির খোসা, একটি হাসুয়া, দুটি ছোঁড়া ও ১০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মনির জানান, ভারতীয় সীমান্ত এলাকা থেকে একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক নিয়ে আসছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোরে উপজেলার মিরপুর মাঠের পাশের একটি বাগানে অবস্থান নেয় পুলিশ। এ সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অতর্কিত গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় ঘটনাস্থলে মাদক ব্যবসায়ী ফাহিম নিহত হন। ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফাহিমের লাশ দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ফাহিমের নামে জেলার বীরগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি মনিরুজ্জামান।