বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক প্রেমিকা। বিষয়টি ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এলাকায়। প্রেমিকের বাড়ি ঘিরে ভিড় বেড়েছে উৎসুক জনতার।
প্রেমিকের নাম জিসান আহমেদ (২১)। তাঁর বাড়ি উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদী গ্রামে। অন্যদিকে প্রেমিকার (২১) বাড়ি একই উপজেলায়।
জানা যায়, একই কলেজে পড়ার সুবাদে তাঁদের পরিচয় হয়। এক সময় পরিচয় প্রণয়ে রূপ নেয়। দুই বছর প্রেম করার পর সম্প্রতি প্রেমিকাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানানোয় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ির সামনে অনশনে বসেন ওই প্রেমিকা।
প্রেমিকা বলেন, তাঁরা দুজনেই এসএসসি পাস করার পর একই কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে পরিচয় তাদের। প্রথমে বন্ধুত্বের মধ্যে সম্পর্ক সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তী সময়ে ভালোবাসায় রূপ নেয়। বর্তমানে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ব্যবস্থাপনা বিসয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে প্রেমিক জিসান মার্কেটিংয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। দীর্ঘ দুই বছর প্রেম করার পর সম্প্রতি তিনি জিসানের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ করেন । এর মধ্যে তিনি জানতে পারেন তাঁর এক বান্ধবীর সঙ্গে গোপনে প্রেম করছে জিসান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেমিক জিসান তাঁকে বিয়ে করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। গত ঈদুল ফিতরের পর থেকে জিসান তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ একেবারে কমিয়ে দেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জিসান তাঁর সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক রাখতে চান বলে এই প্রেমিকার মোবাইল ফোন নম্বর এবং ফেসবুক আইডি ব্লক করে দেন। এই ঘটনায় বাধ্য হয়ে আজ দুপুর থেকে তিনি প্রেমিকের বাড়ির সামনে অনশন শুরু করেন। এরপর বাড়ির লোকজন তাঁকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জিসান বাড়িতে না থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
বিষয়টি সম্পর্কে জিসানের মা নার্গিস বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে এ রকম করতে পারে না। আর যদি সে পছন্দ করেই থাকে তাহলে সেখানে সামাজিকভাবে কথা হতে পারত কিন্তু এই মেয়ে যেভাবে আমাদের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়েছে এতে বাড়িতে উৎসুক জনতার ভিড় লেগে গেছে। বিষয়টি আমাদের কাছে অত্যন্ত লজ্জার। এ কারণে আমরা সামাজিকভাবে অনেক ছোট হয়েছি। বিষয়টির কীভাবে সমাধান করা যায় আমরা তার চেষ্টা করছি। মেয়ের বাবা বিদেশে থাকায় তার মাকে খবর পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তিনি আসবেন না বলে জানিয়েছেন।’
মেয়ের মা জোবেদা বেগম জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি বিব্রতকর অবস্থায় রয়েছেন। লজ্জায় তিনি কোথাও যেতে পারছেন না।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। মেয়ে বিয়ের দাবিতে অনড় অন্যদিকে ছেলে বিয়েতে রাজি নয়। আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।’