ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোদিবিরোধী বিক্ষোভ, সংঘর্ষে নিহত ১

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে মাদ্রাসাছাত্ররা। আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডে বিক্ষোভ শুরু করে। দিনব্যাপী খণ্ড খণ্ড সংঘর্ষে এক যুবক নিহত ও অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করে বিক্ষোভকারীরা।
আজ বিকেলের দিকে শহরের কাউতলী এলাকায় সংঘর্ষকালে আশিক নামের ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হন। পরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত আশিক শহরের কাউতলী এলাকার দাতিয়ারা গ্রামের সাগর মিয়ার ছেলে বলে জানা যায়।
এদিকে, সংঘর্ষে ওই যুবকের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান জেলার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মাদ্রাসাছাত্ররা রেল স্টেশনে যায়। তারা স্টেশনের সিগন্যাল, মাস্টার রুম, কন্ট্রোল রুমসহ কর্মকর্তাদের কক্ষ ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তারা রেল লাইনের স্লিপার তুলে ফেলে এবং সিগন্যাল বক্স ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে প্রবেশ করলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা পাথর নিক্ষেপ করলে ট্রেনটি দ্রুত স্টেশন ত্যাগ করে।
এদিকে জেলা পরিষদ কার্যালয় বিকেল সোয়া ৫টার দিকে হামলা চালানো হয়। এছাড়া শহরের কাউতলী, ভাদুঘরেও ভাঙচুর চালানো হয়।
এরপর সড়কে আগুন ধরিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুহিলপুর, নন্দনপুর, মজলিশপুর, ঘাটুরাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লা সব যানবাহন বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া বিক্ষোভকারীরা শহরের জেলা পরিষদ, পৌর মুক্তমঞ্চ, পৌর মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা করে এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুারাল ভেঙে ফেলে। সেইসঙ্গে শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা সিসি টিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা মোদিবিরোধী স্লোগান দেয়। এক সময় তারা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা জজের বাস ভবনের মূল ফটকে হামলা চালায়। পরবর্তীতে বিক্ষুব্ধ প্রায় পাঁচ শতাধিক লোক জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে গ্যারেজে থাকা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এসব হামলা ও এক যুবকের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘নিহতের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’