ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু, ভুয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার

নেত্রকোনার বারহাট্টায় হাড়ি-পাতিল বিক্রেতার (ভুয়া চিকিৎসক) ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া নবজাতক বারহাট্টা সদর ইউনিয়নের বিক্রমশ্রী নয়াপাড়া গ্রামের রবিন মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত হাড়ি-পাতিল বিক্রেতা মান্নান মিয়াকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, অভিযুক্ত মান্নান মিয়ার বাড়ি বারহাট্টা সদর ইনিয়নের বৃ-কালিকা গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বারহাট্টা উপজেলা সদরের আসমাবাজারে যাওয়ার প্রধান সড়কের পাশে একটি ঘরে হাড়ি-পাতিল বিক্রির পাশাপাশি কবিরাজি চিকিৎসা ও এন্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধপত্র বিক্রি করে আসছিলেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো পড়ালেখা নেই। তার দোকানের সামনে প্রতিদিনই মহিলাদের ভিড় জমে থাকে। গত ৬ আগস্ট শনিবার সকালে নবজাতকটির জ্বর ও জন্ডিস দেখা দিলে চিকিৎসার জন্য মা অজুফা আক্তার শিশুটিকে নিয়ে ওই হাড়ি-পাতিল বিক্রেতা মান্নান মিয়ার কাছে আসেন। মান্নান মিয়া শিশুটিকে খাওয়ানোর জন্য ওরসেফ নামক একটি ওষুধ দেন। ওরসেফ খাওয়ানোর পর দুপুরের দিকে নবজাতকটির মারাত্মক খিচুনি শুরু হয়। পরে শিশুটিকে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১০টার দিকে নবজাতকটি মারা যায়।
ভুক্তভোগী পরিবারটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মান্নান মিয়া চিকিৎসাপত্র ছাড়াই ওরসেফ নামক একটি ওষুধ দেন। তার পরামর্শে ওষুধটি খাওয়ানো হয়। কিছুক্ষণ পরই নবজাতকটির শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে।
উপজেলা যুবলীগনেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই হাড়ি-পাতিল বিক্রেতা মান্নান মিয়ার ওষুধ বিক্রি করার কোনো লাইসেন্স নেই। কয়েক বছর আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ওষুধ বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়। কয়েকদিন নিষেধ মানার পর তিনি আবার ওষুধ বিক্রি শুরু করেন। আমরা অর্থলোভী মান্নান মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফুল হক জানান, নবজাতকটি মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্ত ওই হাড়ি-পাতিল বিক্রেতা ভুয়া চিকিৎসক মান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।