ভোটার স্লিপ যদি বাড়ি পৌঁছানো যায়, ত্রাণ পৌঁছানো যাবে না কেন?’

করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) মেয়র ইকরামুল হক টিটু স্বাস্থ্যসেবা ও অসহায়দের ত্রাণ দেওয়ার মতো মানবিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করেন। সব কাজ শতভাগ নিশ্চিত করতে তিনি নিজে মাঠে থেকে তা বাস্তবায়ন করেছেন। যেখানে প্রয়োজন সেখানেই তাঁর সরব উপস্থিতি নগরবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
করোনা-প্রতিরোধী কার্যক্রম হিসেবে প্রধান সড়কগুলোতে জীবাণু ধ্বংসকারী পানি ছিটানো, ড্রেন পরিষ্কার করা, রাস্তার চার শতাধিক স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা করা, ২০টি স্থানে কেন্দ্র বসিয়ে করোনা সচেতনমূলক প্রচার, শতাধিক ভ্রাম্যমাণ মাইকে অবিরত প্রচার, সাধারণ মানুষের মাঝে মধ্যে স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ, মশক নিধনে স্প্রে করাসহ নানামুখী কার্যক্রম চালান মেয়র টিটু।

এ ছাড়া ৩৩টি ওয়ার্ডে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে।
করোনা দুর্যোগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব কার্যক্রম চলবে বলে জানান মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তিনি বলেন, ‘নগরবাসীকে জীবাণুমুক্ত রাখতে এবং করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩১৪টি এবং বস্তিবাসীর জন্য ৯৪টি স্থানে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও অলিগলি জীবাণুমুক্ত করতে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছ্ন্ন করা হচ্ছে।’
এসব কাজের পাশাপাশি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০০ পিপিই ও ৫০০ পিস হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য ১২০ পিস পিপিই ও ৩০০ হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীদের সুরক্ষায় ৫০০ পিস হ্যান্ড গ্লাভস, ৫৫০ পিস গামবুট, এক হাজার পিস মাস্ক, সিটির স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষায় ১০০ পিস পিপিই, ময়মনসিংহ পুলিশের কর্মরত সদস্যদের জন্য ৫০০ পিস হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করেছেন মেয়র।
শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য ১০০ মিলিলিটারের দুই হাজার ২০০ বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, চার হাজার ৪০০ কেজি ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মশা মারার জন্য হ্যান্ড স্প্রের মাধ্যমে প্রতিদিন ময়মনসিংহের হাসপাতালসহ সরকারি বেসরকারি অফিসে স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।

মেয়র আরো বলেন, ‘ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মেছুয়া বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দুস্কর হয়ে পড়েছিল। প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সেই কাঁচা বাজারটি এরইমধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের চরে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘করোনা মোকাবেলায় মসিকের পক্ষ থেকে এবং মসিক মেয়রের নিজ উদ্যোগে সব ধরনের মানবিক ও প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে।’
সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তিনি তাঁর নিজ উদ্যোগে দুই হাজার হতদরিদ্র পরিবার ও সিটির পক্ষ থেকে ৩৩টি ওয়ার্ডে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ছয় হাজার ৬০০ জনকে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন। ত্রাণ সামগ্রীর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে মসিক মেয়র বলেন, ‘ভোটের স্লিপ যদি বাড়ি বাড়ি পৌঁছানো যায়, ত্রাণ পৌঁছানো যাবে না কেন?’