ময়মনসিংহের সেই শিশুর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের পেট ফেটে অবিশ্বাস্যভাবে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুটির পরিবারকে এক মাসের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে এ টাকা দিতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন।
আদালতে ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রফিকুল ইসলাম। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার শিশুটির পরিবারকে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে তিন মাসের সময় আবেদন করে গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড।
গত ১৯ জুলাই শিশুটিকে দেখাশোনার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী তিন মাসের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ কমিটি গঠন করতে বলা হয়।
একই সঙ্গে নবজাতকের পরিবারকে আপাতত পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পনের দিনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে এ টাকা দিতে বলা হয়। পাশাপাশি শিশু ও তার পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে শিশুর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-বাবা ও বোনের মৃত্যুর ঘটনায় অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে যাওয়া ভূমিষ্ঠ শিশুর ১৮ বছর পর্যন্ত যাবতীয় খরচ রাষ্ট্রকে বহনের নির্দেশনা গতকাল ১৮ জুলাই হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনার পক্ষে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন এ রিট দায়ের করেন। রিটে শিশুটির যাবতীয় খরচ বহন এবং তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
গত ১৬ জুলাই বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তাঁর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাঁদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। এ সময় অবিশ্বাস্যভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতকের। ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে নেওয়ার পর জানা যায়, নবজাতকটি জীবিত রয়েছে।