রাজশাহীতে করোনার প্রথম টিকা নিলেন সাংসদ বাদশা

রাজশাহীতে করোনার প্রথম টিকা গ্রহণ করেছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। আজ রোববার সকাল ১০টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কেন্দ্রে করোনার টিকা নিয়ে তিনি বলেন, ‘করোনার টিকা নিয়ে একটি মহলের অপপ্রচার রয়েছে। টিকা নিয়ে তারা গুজব ছড়িয়ে মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ কারণে রাজশাহীতে সবার আগে আমি টিকা নিয়ে প্রমাণ করে দিলাম, করোনা ভাইরাসের টিকা নিরাপদ।’
ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, এই ভ্যাকসিনটা অত্যন্ত নিরাপদ এবং আমি কোনো কিছু অনুভব করিনি। ব্যথাও অনুভব করিনি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও আমার মধ্যে কোনো অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া নেই। ফলে ভ্যাকসিন নিয়ে যেসব গুজব ছড়িয়েছে তার অবসান হওয়া দরকার।
ফজলে হোসেন বাদশা কোনো ধরনের গুজবে কান না দিয়ে করোনা থেকে মুক্ত থাকতে সবাইকে টিকার জন্য নিবন্ধন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মানুষের মধ্য থেকে ভয়ভীতি দূর করার জন্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি আগে টিকা নিয়েছি। এখন সর্বস্তরের মানুষের কাছে যদি টিকা পৌঁছে যায়, তবে বাংলাদেশ দ্রুত করোনামুক্ত হবে।
সাংসদ বাদশার টিকা নেওয়ার পর তাঁর সহধর্মিণী অধ্যাপিকা তসলিমা খাতুন, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ আদিবা আনজুম মিতা, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী, উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস ও সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার করোনার টিকা গ্রহণ করেন। এরপর রামেক হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও বিজিবির ৭১ জন সদস্য টিকা গ্রহণ করেন।
সাংসদ আদিবা আনজুম মিতা বলেন, ‘আমি টিকা নিয়ে ভালো আছি। যারা এখন অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা ঠিকই এক সময় টিকা নেবেন। শুধু শুধু মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে একটি কুচক্রি মহল। এখানে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’ নিজেদের জীবন বাঁচানোর জন্য টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
টিকা নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘আমি খুবই স্বাভাবিকভাবে ভ্যাকসিন নিয়েছি। সামান্য ব্যথা লেগেছে। পিঁপড়া কামড় দিলে যে রকম ব্যথা, সে রকম।’ তিনিও সবাইকে এই টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান।
রাজশাহী নগরীর তিনটি কেন্দ্রে রোববার থেকে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। অন্য দুটি কেন্দ্র হলো বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল ও সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল।
সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার জানান, রাজশাহীতে উপজেলা পর্যায়ে ১০টি কেন্দ্রে টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। নয় উপজেলার নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা বিশেষায়িত হাসপাতালে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, প্রথমদিন টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা কম থাকার কারণে সীমিত আকারে বুথ আছে। তবে পযার্য়ক্রমে চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বুথের সংখ্যাও বাড়ানো হবে। প্রথম ধাপে রাজশাহীর এক লাখ ৮০ হাজার মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে। আপাতত যারা অ্যাপে নাম নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে ১৫ ক্যাটাগরির নাগরিকদের টিকা দেওয়া হচ্ছে।