রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুপক্ষের গোলাগুলি, ১৩ জন গুলিবিদ্ধ

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শরণার্থীদের দুটি পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ২০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার পর গুলিবিদ্ধ নয়জনকে কক্সবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধ অন্য চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহত বাকিদের ক্যাম্পের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নয়াপাড়া ক্যাম্পের ‘ই’ ও ‘সি’ ব্লক এলাকায় গোলাগুলির এ ঘটনা শুরু হয়। থেমে থেমে এই গোলাগুলি রাত ১১টা পর্যন্ত চলে।
গুলিবিদ্ধ রোহিঙ্গারা হলেন ‘ই’ ব্লকের শওকত (১৯), মো. হাসান (২৮), জিয়াদুল (১২), ‘সি’ ব্লকের বশির আহমেদ (৩২), মো. হোসেন (২৩), ফারুক (৮), জুবায়ের (১৮), বি-ব্লকের আবুল হোসেন (২২) ও ক্যাম্প-২৬ এ-১-এর আবদুল গনি (২৪)।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে জকির ও আমান উল্লাহর নেতৃত্বে একদল ডাকাত ‘ই’ ব্লকের কাপড় ব্যবসায়ী নুর নবীর কাছে চাঁদা দাবি করতে গেলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এ সময় সাধারণ রোহিঙ্গারা ডাকাত দলকে ঘেরাও করে ফেলে। একপর্যায়ে জকির গ্রুপের প্রতিপক্ষ সালমান শাহ গ্রুপ ও খাইরুল গ্রুপ সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগ দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে জকির গ্রুপ এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এ সময় তারা ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এতে প্রায় ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। আহত রোহিঙ্গাদের নয়াপাড়া গণস্বাস্থ্য ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নয়জনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। আহত বাকিরা ক্যাম্পের গণস্বাস্থ্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন।
খবর পেয়ে র্যাব ও পুলিশসহ যৌথ টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালায় বলে জানা গেছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে উপজেলার নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে গতকাল সন্ধ্যা থেকেই দুটি পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এরই একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।’
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওসি জানিয়েছিলেন, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। অভিযান চলছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নির্যাতিত হয়ে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাঁরা শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করেন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গারা সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে জড়িয়েছেন।