সরকারি কর্মকর্তাকে পেটানো আ.লীগ নেতার জামিন

সিলেটে সাধারণ ছুটির মধ্যে সরকারি কর্মকর্তার উপর হামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতা রঞ্জিত সরকার ও তাঁর ছয় সহযোগীকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া আরো দুজনও জামিন পেয়েছেন।
আজ সোমবার দুপুরে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান আসামিরা। শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
গত ১২ মে সিলেট বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা ও তাঁর সহযোগীদের প্রথা ভেঙে জামিন আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির প্রাক্তন একজন সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বর্তমানে লকডাউনের কারণে আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শুধু কারাগারে আটক থাকা আসামিদের জামিন আবেদনের জন্য ভার্চুয়াল আদালত চালু করা হয়েছে। আর ছুটির দিনে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের জন্য একটা স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট কাজ করে, কিন্তু সেখানে আসামির আত্মসমর্পণ করে জামিন চাওয়ার সুযোগ নেই। অথচ, রঞ্জিত সরকারের মামলার ক্ষেত্রে প্রথা লঙ্ঘন করে আমলি আদালতে জামিন আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
তবে, এ ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রঞ্জিত সরকারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট পৃথ্বিশ দত্ত।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘সাধারণত ছুটির দিনে আমলি আদালতে আত্মসমর্পণের সুযোগ নেই, বেইল পাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তবে রঞ্জিত সরকারের ক্ষেত্রে কীভাবে আদালত আত্মসমর্পণের সুযোগ দিলেন সেটা বুঝতে পারছি না।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে প্রজননের জন্য কয়েকটি পাঁঠা আনা হয়। সেই পাঁঠার উপর নজর পড়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতা ও তাঁর অনুসারীদের। গত ১১ মে তারা গিয়ে খাওয়ার জন্য সেখান থেকে একটি পাঁঠা চান। এ সময় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফুল তাদের আবদার পূরণে রাজি হননি। পরে দলবল নিয়ে রঞ্জিত সরকার সেখানে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফের ওপর হামলা চালান। অফিসের অন্য কর্মকর্তাদেরও লাঞ্ছিত করেন তারা। পরে আশরাফুলকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।