সিলেটে কাজ হারিয়ে পাথর শ্রমিকদের বিক্ষোভ-সমাবেশ
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় করোনাকালে কাজ হারিয়ে প্রায় ১০ হাজার পাথর কোয়ারি মালিক-শ্রমিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। পরে শ্রমিকরা কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করে স্মারকলিপি দেন। আজ সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত শ্রমিক ও মালিকরা এ কর্মসূচি পালন করে।
স্মারকালিপিতে পাথরমালিক ও শ্রমিকরা অভিযোগ করে, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কোনো নোটিশ না দিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে কানাইঘাট উপজেলায় পাথর ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। লোভা নদীর জিরো পয়েন্ট থেকে কানাইঘাট সুরমা ব্রিজের উজান পর্যন্ত দুই তীরে রাখা এক কোটি ঘনফুট ব্যক্তি মালিকানাধীন পাথর জব্দ করে। সেইসঙ্গে পাথর বিপণন ও পরিবহন কাজে ব্যবহৃত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ধ্বংস করে ফেলে। এতে কানাইঘাটের প্রায় চার শতাধিক পাথর ব্যবসায়ীর শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়। বেকার হয়ে পড়ে প্রায় ৫০ হাজার পাথর শ্রমিক।
একদিকে করোনার কারণে আর্থিক মন্দা অন্যদিকে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের হটকারি সিদ্ধান্তের ফলে মানবেতর জীবন যাপন করা শ্রমিকরা মারাত্মক বিপাকে পড়েছে।
পাথরমালিক-শ্রমিকের এ আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ। পাথর শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিলের পর প্রতিবাদ সমাবেশে করে। ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জামাল আহমদ, মুলাগুল পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, লোভাছড়া আদর্শ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো নাজিম উদ্দিন, বাংলাদেশ পাথর ব্যবসায়ী সমিতি কানাইঘাট শাখার সভাপতি হাজি আব্দুল মালিক মানিক, লোভাছড়া পাথর শ্রমিক সমিতির সভাপতি আজাদুর রহমান বতা, সাধারণ সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন।
এরপর পাথর মালিক ও শ্রমিক নেতারা কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বারিউল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাথর মালিক ও শ্রমিক নেতাদের আইনগতভাবে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. এমরান হোসেন সাংবাদিকদের জানান, লোভাছড়া পাথর কোয়ারি লিজের মেয়াদ গত ১৪ এপ্রিল শেষ হয়ে যায়। এ কারণে খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো কোয়ারিতে পাথর উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ করার আদেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কানাইঘাট উপজেলাজুড়ে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান শুরু করে এবং এক কোটি ঘনফুট পাথর জব্দ করে।
জব্দকৃত পাথরগুলোর মালিকানা নির্ধারণের জন্য কানাইঘাটের পাথর ব্যবসায়ীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান।