১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে সুন্দরবন লঞ্চের ৩৬ কর্মী

নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা থেকে পটুয়াখালীতে আসায় বিলাসবহুল ‘সুন্দরবন-১৪’ লঞ্চের সুপারভাইজার ইউনুস, মাস্টার, সুকানিসহ ৩৬ কর্মীকে মাঝনদীতে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের আদেশ দিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে পটুয়াখালী লঞ্চ টার্মিনালের পূর্ব প্রান্তে নদীর মধ্যে নোঙর করা অবস্থায় লঞ্চটিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
পটুয়াখালী নৌবন্দর কর্মকর্তা খাজা সাদিকুর রহমানের সহযোগিতায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায় কল্লোল ও গোলাম সরওয়ারের নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত এ আদেশ দেন।
এ সময় লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী পাওয়া যায়নি। তাই লঞ্চটিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে মাঝনদীতে ভাসমান অবস্থায় রাখার আদেশ দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায় বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশে রাতে লঞ্চঘাটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ঘাটসংলগ্ন মাঝনদীতে নোঙর করা আলোবাতি বন্ধ করা সুন্দরবন-১৪ লঞ্চটি দেখতে পেয়ে ট্রলারে করে সেখানে হাজির হই আমরা। লঞ্চের স্টাফদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, লঞ্চটি বিনা অনুমতিতে এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সকালে ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশে আসে। পরে ঘাটসংলগ্ন মাঝনদীতে নোঙর করে রাখা হয় লঞ্চটি।’
আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতে ঢাকাফেরত যাত্রী বা লোকদের কোয়ারেন্টিনে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকায় ওই লঞ্চের স্টাফদের লঞ্চেই কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়।
পটুয়াখালী নৌবন্দরের সহকারী পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান বলেন, ‘লঞ্চটি পটুয়াখালী আসছে এমন খবর পেয়ে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে অভিযানে অংশগ্রহণ করি। তবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, লঞ্চটি বিনা অনুমতিতে ঢাকার সদরঘাটের পাশ থেকে পটুয়াখালী এসেছে।’
লঞ্চের সুপারভাইজার ইউনুসসহ মোট ৩৬ কর্মীকে লঞ্চেই কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। লঞ্চটি ঘাট বা নদীর পাড়ে নোঙর না করে ১৪ দিন মাঝনদীতে নোঙর করে থাকতে হবে বলেও সাদিকুর রহমান উল্লেখ করেন।
এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, লঞ্চটি পটুয়াখালী লঞ্চঘাটের কাছাকাছি এলে প্রশাসনের অভিযানের খবর আঁচ করতে পেরে আচমকা আলোবাতি বন্ধ করে নদীতে নোঙর করে রাখে। এই ফাঁকে লঞ্চের সুপারভাইজার ইউনুস লঞ্চ থেকে ট্রলারে করে পালানোর চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি।