ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলায় শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাইলেন চবি উপাচার্য

ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে হেয় করার ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ।
দুই পক্ষের সমঝোতার পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের করা মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন জানান।
এ বক্তব্যের কারণে চবি উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন দুঃখিত, অনুতপ্ত এবং তা স্বেচ্ছাকৃত নহে ও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ জানান।
এর আগে চট্টগ্রাম ক্লাব মিলনায়তনে দুই পক্ষের সমঝোতা হয়। সমঝোতার আয়োজন করেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহাবুবুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ তত্ত্ব বিভাগ প্রাক্তন শিক্ষার্থী অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. গিয়াস উদ্দীন। এ ছাড়া মামলার আইনজীবী মুজিবুর রহমান ফারুক ও অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৮ নভেম্বর নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চবি সাবেক উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ আলমের স্মরণ সভায় উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ড. গাজী সালেহ উদ্দিনকে দেখিয়ে তিনি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কি না এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার দলে শিক্ষক, সচিবসহ অনেকে জড়িত উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে তিনি বেফাঁস মন্তব্য করেন। এ খবর এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব মহলে সমালোচনার ঝড় উঠে।
গত ১২ ডিসেম্বর মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন ড. গাজী সালেহ উদ্দিন। আদালত মেট্টোপলিটন পুলিশের উপকমিশনারকে (গোয়েন্দা) তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেন।
দুই পক্ষের আপসনামায় উল্লেখ করা হয়, প্রথম পক্ষ ড. গাজী সালেহ উদ্দিনের মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে দ্বিতীয় পক্ষ চবি ভিসি ড. ইফতেখার উদ্দিন সংশয় প্রকাশ করে সম্মানহানি ঘটান। এ অভিযোগে ড. গাজী সালেহ উদ্দিন মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বর্ণিত ঘটনার তারিখ সময় স্থান ও পরবর্তী সময়ে এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় চবি ভিসি ইফতেখার উদ্দিন ঘটনাটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান।
সমঝোতা সভার আয়োজনকারী চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহাবুবুল আলম বলেন, ‘ড. ইফতেখার উদ্দিন ও ড. গাজী সালেহ উদ্দিন দুজনই আমার সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক। দুজনের মধ্যে আপস করে দিয়েছি। গাজী স্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন। দুজনই ভিন্ন কোনো প্রতিকার দাবি করবেন না। উভয়ে নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখবেন।’
সমঝোতায় থাকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমাজ তত্ত্ব বিভাগ প্রাক্তন শিক্ষার্থী অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘মাহাবুব ভাইসহ আমরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। একই সঙ্গে সংগঠন করি। তাই তিক্ততা না বাড়াতে এ উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে।’