স্থলসীমান্ত চুক্তির জন্য সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাব গৃহীত
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/06/02/photo-1433262784.jpg)
ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদিত হওয়ায় জাতীয় সংসদে সে দেশের জনগণ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার সংসদের অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন ও অন্যান্য কর্মসূচি স্থগিত রেখে সংসদ কার্যপ্রণালি বিধির ১৪৭(১) বিধির আওতায় এই ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনা শুরু হয় বলে জানায় বার্তা সংস্থা বাসস।
urgentPhoto
চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে এর ওপর সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সরকারি দলের ড. হাছান মাহমুদ, মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম সুজন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাসদের মইনউদ্দিন খান বাদল ও স্বতন্ত্র সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা শেষে স্পিকার ধন্যবাদ প্রস্তাবটি ভোটে দিলে তা সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সম্পাদিত স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদিত হওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও সে দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার অংশ হিসেবেই অত্যন্ত সাফল্যের সাথে এ চুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন।
রওশন এরশাদ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিনজন সদস্যকে জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়ারও প্রস্তাব করেন।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভায় ঐতিহাসিক সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রতিটি সদস্যের আকুণ্ঠ সমর্থন, ভারতের সব রাজনৈতিক দলসহ প্রতিটি মানুষের যে ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা ছিল তা ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বের সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ। তেমনিভাবে ১৯৭১ সালে ভারতের সরকার ও প্রতিটি মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এ দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে ১৯৭৪ সালে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে এ চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। সে সময় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংসদে অনুমোদিত হয়েছিল। আর বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরাধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব কূটনৈতিক দূরদর্শিতা আজ প্রমাণিত হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী কূটনৈতিক তৎপরতার ধারাবাহিকতায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ছিটমহলে বসবাসকারী জনগণ নাগরিকত্বের স্বীকৃতি লাভ করেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই জাতি সমুদ্রসীমা লাভ করেছে। পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। ফারাক্কার পানি চুক্তি হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই জাতির অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সদস্য এইচ এম এরশাদ বলেন, স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদন করতে গিয়ে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভা সে দেশের সংবিধান সংশোধন করতে হয়েছে এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত। এক দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে অপর দেশের সংবিধান সংশোধন বিশ্বের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে যে ‘মুজিব-ইন্দিরা’ চুক্তি হয়েছিল এটিকে যারা গোলামি চুক্তি বলেছে সেসব অর্বাচীন আজ পরিত্যক্ত।