শরীয়তপুরে বাবাকে ‘কুপিয়ে হত্যা’, ছেলে আটক

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে বৃদ্ধ বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে ‘মানসিক প্রতিবন্ধী’ ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ছোট কালীনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনদের দাবি, দবির (২২) নামের ওই ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ কথা মানতে পারছে না পুলিশ।
এলাকাবাসী ও স্বজনরা জানিয়েছে, গত ছয় বছর আগে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছোট কালীনগর গ্রামের ওয়ারেছ খাঁ (৭০) তাঁর ছোট ছেলে দবিরকে নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। তাঁর বড় দুই ছেলে ঢাকায় এবং দুই মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। দবির দুই বছর আগে গোসাইরহাট সামছুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বিএ ভর্তি হন। এ সময় তাঁর মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এরপর তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দেন। বাবা ও ছেলের মাঝেমধ্যেই বাকবিতণ্ডা হতো বলে জানান প্রতিবেশীরা।
আজ সকালে ওয়ারেছ বাড়ির উঠানে কাজ করছিলেন। এ সময় ছেলে দবিরের সঙ্গে হঠাৎ করে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ দবির ঘর থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাবার গলায় কোপ দেন। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
তখন ছেলে ‘বাবা বাবা’ বলে চিৎকার দিয়ে নিজেও সেই অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁর চিৎকারে চাচাতো ভাই রুবেল খান ও সেলিম উদ্দিনসহ পার্শ্ববর্তী লোকজন গিয়ে ছেলেকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে।
পরে গোসাইরহাট থানার পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে হত্যার আলামত হিসেবে রক্তাক্ত জামা-কাপড় ও ছেনি উদ্ধার করে। সেখান থেকে ছেলে দবিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নিহতের ভাতিজা রুবেল খান বলেন, ‘দবির তাঁর বাবাকে হত্যা করে চিৎকার দিয়ে নিজের গলায় ছেনি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ সময় আমরা তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখি।’
নিহতের মেয়ে নাজমা বেগম ও জামাতা আবুল কালাম মাঝি জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে দবির মানসিক প্রতিবন্ধী। এ কারণেই তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দেন। আজ সকালে তিনি বাবার কাছে টাকা চান। টাকা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। দবিরকে আটক করা হয়েছে। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী বলে স্বজনরা জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।