আমরা ভারতপ্রীতিতেও নেই, ভারতভীতিতেও নেই : কাদের
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/03/12/photo-1489331194.jpg)
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ভারতের সাথে আমাদের কোনো চুক্তি হলে, তা জাতীয় স্বার্থেই হবে। জাতীয় স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা কোনো দিন কারো সাথে চুক্তি করবেন না।’ আওয়ামী লীগ সরকার ভারতপ্রীতিতেও নেই, ভারতভীতিতেও নেই বলে তিনি দাবি করেন।
আজ রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ৭ মার্চ উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। জাতীয় শ্রমিক লীগ ওই সমাবেশের আয়োজন করে।
ওবাদুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখনো ভারত যাননি। তিনি যাবেন এপ্রিলে, আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ঘোষণা হয়নি। আর তার আগেই বিএনপি গোপন চুক্তির গন্ধ ভাঙা রেকর্ড বাজানো শুরু করেছে। বিএনপি ক্ষমতার জন্য ভারতপ্রীতি, আর ক্ষমতা থেকে গেলে ভারতভীতি। আমরা ভারতপ্রীতিতেও নেই, ভারতভীতিতেও নেই। ভারত আমাদের দুঃসময়ের বন্ধু, বাংলাদেশের স্বার্থে এ বন্ধুত্ব থাকবে। দেশের জনগণ না চাইলে এ বন্ধুত্ব থাকবে না।’
শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সবাই জানে বিএনপি ওপরে ওপরে বলছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে আসবে না, কিন্তু তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি বিএনপি শুরু করে দিয়েছে। বিএনপি পানি ঘোলা করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে।’
‘রাজনীতির নামে দোকানের স্বীকৃতি দেব না’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতির নামে যে দোকান রয়েছে তা বন্ধ করা দরকার। রাস্তায় দেখলাম আওয়ামী প্রচার লীগ, প্রজন্ম লীগ, তরুণ লীগ আর ওলামা লীগ যে কয়টা সেটাও জানি না। রাজনীতির নামে এসব দোকানের স্বীকৃতি আমরা দেব না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা, জয় এবং আমাদের দলের নেতাদের ছবি ব্যবহার করে ব্যানার-পোস্টার বানায়, তাদের আপনারা প্রতিরোধ করুন। তাদের কোনো আদর্শ নেই। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে টেলিভিশনে ছবি তোলা, আর চাঁদাবাজি করা। তারা জনগণের কাছে আমাদের দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে।’
গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দাওয়াত দিলেই আপনারা এসব সংগঠনের অনুষ্ঠানে যাবেন না। গণমাধ্যমের সংবাদে তারা উৎসাহিত হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রচার না হলে নেতা হতাশ হয়ে আর এসব দোকানে যাবে না।’
‘যাঁরা শ্রমিক নন, তাঁরা কীভাবে শ্রমিক নেতা’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার। তিনি ক্ষমতায় আসার পর শ্রমিকদের জন্য প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কাজ করেছেন। বিএনপির আমলে বন্ধ হওয়া নয়টি পাটকল আমরা আবার চালু করেছি। পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন চারগুণ বৃদ্ধি করেছেন। তিনি বেকার শ্রমিকদের পুনর্বাসন করেছেন।’
শ্রমিকদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা কারো উসকানিতে বিভ্রান্ত হয়ে ফাঁদে পা দেবেন না। আগামী দেড় বছরও শেখ হাসিনার সরকার আপনাদের জন্য কল্যাণমুখী পদক্ষেপ নেবেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘যাঁরা শ্রমিক নন, তাঁরা কীভাবে শ্রমিক নেতা হন? পোশাক কারখানাসহ অন্যান্য খাতে শ্রমিক না হয়েও শ্রমিক নেতা আছেন। শ্রমিক লীগেও যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, তাঁদের শ্রমিক হতে হবে। শ্রমিক ছাড়া শ্রমিক নেতা হলে গরিবের দুঃখ বুঝবে না। পরিবহনেও অনেক নেতা আছেন, যাঁদের পরিবহনের কোনো রেকর্ড নেই।’
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘একজন চালক (বাস, ট্রাক) টানা ২৪ ঘণ্টা গাড়ি চালালে সেখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। কারণ সেও মানুষ, তার বিশ্রামের দরকার আছে। একটা গাড়িতে একজন চালক থাকা ঠিক নয়, এটা অমানবিক।’
জনগণকে জিম্মি করে কোনো ধর্মঘট কাম্য নয় মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা জনগণকে জিম্মি করে ধর্মঘট করে তারা জনগণের বন্ধু হতে পারে না।
আন্দোলনের অনেক ভাষা আছে। কর্মসূচি দিলে তা বাস্তবভিত্তিক কর্মসূচি দিতে হবে। শ্রমিকদের নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়। আপনারা কোনো ষড়যন্ত্রে কান দেবেন না।’
জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।