আত্মসমর্পণকারী ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্যের নামে মামলা

বরিশালে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণকারী সুন্দরবনের বনদস্যু ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্যের নামে বৃহস্পতিবার রাতে মোংলা থানায় দস্যুতা ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। র্যাব ৮-এর উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সৈয়াদুজ্জামান বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
এ সময়ে বনদস্যু ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্যকে ২১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ২৩৭ গুলিসহ মোংলা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব।
এর আগে বৃহস্পতিবার বরিশালের রূপাতলীতে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে অস্ত্র-গুলি জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে এই বনদস্যু দলের ১৫ সদস্য আত্মসমর্পণ করেন।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন ছোট রাজু বাহিনীর প্রধান মো. রাজু মোল্লা ওরফে ছোট রাজু (৪৮), মো. মনিরুল ইসলাম (৩৫), মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী (২৯), মো. আফজাল হোসেন (২৫), মো. হারুন সরদার (৩৮), মো. বিল্লাল গাজী ওরফে ম্যাজিক বিল্লাল (৩৬), মো. খতিব গাজী ওরফে খতিব (৩৭), মো. মিকাইল গাজী (৩৭), মো. কামরুল সরদার (৩৯), মো. ফরহাদ সরদার (২৬), মো. সালাম গাজী (৩৭), মো. মিলন শেখ (২৫) ও তাঁর বাবা মো. জলিল শেখ, মো. ফরহাদ গাজী (৩২), মো. সাব্বির শেখ (৪২) ও মো. মনিরুল গাজী মনি (৩৯)। আত্মসমর্পণকারীদের বাড়ি খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় বলে জানিয়েছে র্যাব।
ছোট রাজু বাহিনীর সদস্যদের জমা করা আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পাঁচটি বিদেশি একনলা বন্দুক, পাঁচটি বিদেশি দোনলা বন্দুক, পাঁচটি এয়ার রাইফেল, দুটি বিদেশি রাইফেল, চারটি ওয়ান শ্যুটার গানসহ মোট ২১টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিভিন্ন ধরনের এক হাজার ২৩৭টি গুলি।
দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো বনদস্যু ছোট রাজু বাহিনী আত্মসমর্পণ করায় এ নিয়ে গত ১১ মাসের মধ্যে ১০টি বনদস্যু বাহিনীর ১০৭ জন সদস্য ২১৬টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১১ হাজার ৩৮০টি গুলি র্যাবের কাছে জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করল।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৩১ মে সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু মাস্টার বাহিনীর ১০ জন জলদস্যু ৫২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং প্রায় তিন হাজার ৯০৪টি গুলি জমা দিয়ে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। তার ধারাবাহিকতায় গত ১৪ জুলাই সুন্দরবনের কুখ্যাত জলদস্যু মজনু ও ইলিয়াস বাহিনীর ১১ জন জলদস্যু ২৫টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ২০টি গুলি জমা দেয়। গত ৭ সেপ্টেম্বর জলদস্যু আলম ও শান্ত বাহিনীর ১৪ জন জলদস্যু ২০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সর্বমোট এক হাজার আটটি গুলি জমা দেয়। ১৯ অক্টোবর সাগর বাহিনীর ১৩ সদস্য ২০টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫৯৬টি বিভিন্ন ধরনের গুলি জমা দেয়। গত ২৮ নভেম্বর খোকাবাবু বাহিনীর ১২ সদস্য ২২টি দেশি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার তিনটি গুলিসহ র্যাব ৮-এর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
৭ জানুয়ারি নোয়া বাহিনীর ১২ সদস্য ২৫টি অস্ত্র ও এক হাজার ১০৫টি গুলিসহ র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ২৯ জানুয়ারি বনদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনীর ২০ সদস্য ৩১টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ৫০৭টি গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে। সর্বশেষ আজ ৩০ মার্চ ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ সদস্য ২১টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ২৩৭টি গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে।