ওঁরাও কিশোর হত্যা : তিনজনকে হেফাজতের আবেদন

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে মিথুন ওঁরাওকে (১২) গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলার তিন নম্বর আমলি আদালতে তাদের হাজির করে হেফাজতের আবেদন করা হয়। বিচারক মামলার পরবর্তী সময়ে শুনানির জন্য রেখে আসামিদের জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এঁরা হলেন আব্দুল মতিন, বাবুল আখতার ও মুফিজ উদ্দিন।
জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোস্তফা কামাল এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে গতকাল বিকেলে এ ঘটনার জড়িতদের গ্রেপ্তার ও পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা।
গত সোমবার সকালে জমির দখলকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তরা উপজেলার আকবরপুর গ্রামের আদিবাসী পল্লীর সনু ওঁরাওয়ের ছেলে মিথুনকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় আরো অন্তত ১০ জন আহত হয়। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই রাতে নিহতের বাবা বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে পত্নীতলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সমীর চন্দ্র বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। রাতেই মামলা দুটি তদন্তের জন্য ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।
এ দিকে এ ঘটনায় স্থানীয় আদিবাসী ও ভূমিহীনদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল বিকেলে এলাকার লোকজন ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা উপজেলার নজিপুর চৌরাস্তার মোড়ে সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
জাতীয় আদিবাসী পরিষদ পত্নীতলা উপজেলার সভাপতি সুধীর তির্কির সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবি নেতা অ্যাডভোকেট মহসিন রেজা, বাসদ নেতা জয়নাল আবেদীন মুকুল, আদিবাসী যুব পরিষদের উপদেষ্টা মোশারফ হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুণ্ডা, সাংগঠনিক সম্পাদক বিমল চন্দ্র রাজৈর, সুবাস চন্দ্র হেমরম, আমিন কুজুর, নরেন চন্দ্র পাহান, ভারত পাহান, জয় বর্মণ প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে বক্তারা পত্নীতলা থানার ওসি আব্দুর রফিকের অপসারণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, মিথুনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন বক্তরা।