ঝিনাইদহে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান শেষ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযান সমাপ্তের ঘোষণা দেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. দিদার আহম্মেদ।
ডিআইজি দিদার আহম্মেদ বলেন, গতকাল রোববার উদ্ধার করা সাতটি গ্রেনেড ও একটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে আজ। নতুন করে উদ্ধার করা হয়েছে গুলি ও বোমা তৈরির ইলেকট্রিক ডিভাইস।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও জেলা পুলিশ যৌথভাবে লেবুতলা গ্রামের সরাফতের বাড়িতে প্রথম অভিযান চালায়। দুপুরের দিকে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. দিদার আহম্মেদ, অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। পরে ডিআইজির নেতৃত্বে অভিযান পরিচালিত হয়।
এর আগে আটক ‘জঙ্গি’ শামীম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, মহেশপুর ও ঝিনাইদহ সদরের দুদিনের অভিযানে জেলা পুলিশের ৩০০ সদস্য অংশ নেন।
আজ সোমবার সকাল ৮টার দিকে জেলা শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে লেবুতলা গ্রামে চূড়ান্ত অভিযানের সময় গ্রামের আশপাশের বাড়িঘর থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে সকাল ৭টা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। সংবাদকর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে অবস্থান করতে বলা হয়।
বেলা ১০টা ৫৬ মিনিটের দিকে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের উপকমিশনার (ডিসি) সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে বোমা বিশেষজ্ঞদল বাড়িটিতে প্রবেশ করে। এরপর উদ্ধার বোমার প্রথমটি বেলা সোয়া ১২টার দিকে সফলভাবে বিস্ফোরণ ঘটান তাঁরা। এ সময় পুরো এলাকা বোমার বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে। গ্রামের মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশপাশের মাঠ ও বাগানে আশ্রয় নেন।
অভিযান শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শামীমের মা সুফিয়া ও বড় ভাই হাসানের স্ত্রী সবুরাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। তাঁদের এখনো আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি।
‘দুই জঙ্গির পরিচয় মিলেছে’
এদিকে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, মহেশপুর উপজেলার বজরাপুর গ্রামে নিহত দুই ‘জঙ্গি’র পরিচয় পাওয়া গেছে। আজ বিকেল ৩টার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে স্বজনরা তাঁদের লাশ শনাক্ত করেন। এঁরা হলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের নওমুসলিম আবদুল্লাহ ওরফে প্রভাত ও পাশের চুয়াডাঙ্গার তুহিন।
পুলিশ সুপার জানান, আবদুল্লাহর লাশ তাঁর ভাই বিপুল কুমার নিতে অস্বীকার করায় আঞ্জুমানে মুফিদুলের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তুহিনের লাশ তাঁর মা শাহিনূর বেগম শনাক্ত করেছেন। তাঁর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।