সিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামির জামিন নামঞ্জুর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওয়াহিদা সিফাত হত্যার মূল আসামি সিফাতের স্বামী মো. আসিফ ওরফে পিসলীর জামিন আবেদন উচ্চ আদালতে নামঞ্জুর হয়েছে।
আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের আদালতে পিসলীর জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবীরা। বাদীপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান এর বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পিসলীর জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগে নিম্ন আদালতও তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন।
এদিকে গত তিন মাসেও সিফাত হত্যা মামলার অপর দুই আসামি সিফাতের শ্বশুর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হোসেন রমজান ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
সিফাতের চাচা ও হত্যা মামলার বাদী মিজানুর রহমান খন্দকার বলেন, ‘সিফাতের শ্বশুর মোহাম্মদ হোসেন রমজান ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনের চেষ্টা করেছিলেন। গত ২০ এপ্রিল উচ্চ আদালত তাঁদের আগাম জামিন নামঞ্জুর করার পর থেকে তাঁরা পুলিশের চোখে পলাতক। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা রাজশাহীতে অবস্থান করছেন। মহিষবাথানের নিজ বাড়িতেও মাঝে মাঝে যাচ্ছেন তাঁরা। মামলার বাদীর অভিযোগ, একাধিকবার সিফাতের পলাতক শ্বশুর ও শাশুড়ির সুনির্দিষ্ট অবস্থান জানানোর পরও পুলিশ রহস্যজনক কারণে তাঁদের গ্রেপ্তারে গড়িমসি করছে।’
এ ব্যাপারে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘সিফাতের শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এর আগে তাঁদের অবস্থানের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হলেও তাঁদের নির্দিষ্ট ঠিকানায় পাওয়া না যাওয়ায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, ‘সিফাত হত্যা মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে। মামলাটি পুলিশের মহাপরিদর্শকের মনিটরিং সেলে স্থানান্তর হওয়ার কথা। আগামী সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে।’
গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় নগরীর মহিষবাথান এলাকার মোহাম্মদ হোসেন রমজানের বাড়িতে তাঁর পুত্রবধূ ওয়াহিদা সিফাতের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ঘটনার চার দিন পর সিফাতের চাচা মিজানুর রহমান খন্দকার রাজপাড়া থানায় ২০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় সিফাতের স্বামী মোহাম্মদ আসিফ ওরফে পিসলী, শ্বশুর মোহাম্মদ হোসেন রমজান ও শাশুড়ি নাজমুন নাহার নাজলীকে আসামি করা হয়। প্রথমে রাজপাড়া থানার এসআই শরিফুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন। রাজপাড়া থানা চাঞ্চল্যকর এই মামলায় তেমন কোনো অগ্রগতি করতে না পারায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মামলাটি পরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।