কিরণমালা ও ফ্লোরটাচে জমজমাট পাবনার ঈদবাজার

জমে উঠেছে পাবনায় ঈদ বাজার। এরই মধ্যে ১২ রোজা অতিক্রম হওয়ার মানুষ ঈদের নতুন পোশাক কেনাকাটা শুরু করে দিয়েছে। শহরের বিভিন্ন মার্কেটের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা। চলতি বছর মেয়েদের পোশাকে স্থান পেয়েছে ‘কিরণমালা’ এবং ‘ফ্লোরটাচ’ নামের পোশাক।
গত কয়েকদিন বৃষ্টি হলেও মার্কেটে লোক সমাগম ব্যাপক দেখা যায়। এদিকে বিভিন্ন পোশাকের দোকানগুলোতে রঙ-বেরঙের বাহারি ডিজাইনের পোশাক শোভা পাচ্ছে। বিভিন্ন পোশাকের আকাশ ছোঁয়া দাম শুনে ঘুরপাক খাচ্ছেন ক্রেতারা। স্বল্প আয়ের মানুষ মার্কেটে এসে পোশাক কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। চড়া দাম হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে অনেক ক্রেতা।
তবে দোকানিরা বলছে ভিন্ন কথা। তারা বলছে, এবার পোশাকের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। বরং রমজান মাসের ১২ দিন চলে গেলেও বেচা-বিক্রি তেমন নেই।
পাবনা শহরের নিউমার্কেট, রবিউল মার্কেট, খান বাহাদুর শপিং মল, স্টার কমপ্লেক্স, হাজী মার্কেট, হুমায়রা মার্কেট, সেভেন স্টার, এ আর প্লাজা, এ আর কর্নার, নিউ পয়েন্ট, আওরঙ্গজেব সড়ক, মহিলা কলেজ রোডসহ বিভিন্ন অভিজাত মার্কেটের মিনা ফেব্রিক্স, গ্রামীণ চেক, বৃষ্টি ফেব্রিক্স, গাঁওগেরাম আঁচল, শিল্প-আঙ্গিনা, ফ্যাশন টাচ্, আলাল, অপরূপা, প্রজাপতি, আকাশ কালেকশনসহ বিভিন্ন দোকানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শহরের মার্কেটগুলোর বিভিন্ন দোকান ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের কথা বলে জানা গেছে, গত বছর বাজারে ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের নায়িকার নামানুসারে ‘পাখি’ থ্রি পিস ছিল আকর্ষণীয়। এ বছরও অনুরূপ ‘কিরণমালা’ এবং ‘ফ্লোরটাচ’ থ্রি পিস বাজারে এসেছে। ভারতীয় এসব সিরিয়াল দেখে শিশু থেকে শুরু করে তরুণী ও যুবতী মেয়েদের এসব পোশাকের প্রতি বেশি ঝোঁক দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন দোকানে দেখা গেছে, প্রতিটি থ্রি পিসের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া তৈরি পোশাক ৮০০, এক হাজার থেকে শুরু করে সাড়ে আট হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো দোকানে আরো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ‘কিরণমালা’ এবং ‘ফ্লোরটাচ’-এর দাম তিন হাজার টাকা থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে।
শহরের রবিউল মার্কেটে কেনাকাটা করছিলেন রুবাইয়া ইসলাম, বিউটি খাতুন, সুলতানা পারভীন ও সূচনা। তাঁরা এনটিভি অনলাইনকে জানান, এ বছর থ্রি পিস এবং তৈরি পোশাকগুলোর আকাশ ছোঁয়া দাম চাচ্ছেন দেকানদাররা। একটি ‘কিরণমালা’ থ্রি পিসের দাম চাচ্ছেন পাঁচ হাজার টাকা থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখছি। কিন্তু চড়া দাম হওয়ায় পছন্দ অনুযায়ী পোশাক কেনা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
নিউমার্কেটে কথা হয় ক্রেতা রতন শেখের সাথে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সিরিয়াল দেখে নতুন নতুন পোশাকের নাম দেওয়া হয়। আর মেয়েদের মা-বাবার কাছে বায়না হয় ওই পোশাক চাই। এই সুযোগেই এক শ্রেণির ব্যবসায়ী পোশাকের দাম চেয়ে বসেন আকাশ ছোঁয়া। ফলে হিমশিম খেতে হয় ক্রেতাদের।’
এ বছর মেয়েদের কোন পোশাকের চাহিদা বেশি জানতে চাইলে রবিউল মার্কেটের স্কাই ফ্যাশনের মালিক বাকি বিল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গত বছরের মতোই এ বছরও ভারতীয় থ্রি পিসের চাহিদাই বেশি।’
হুমায়রা মার্কেটের সাজঘরের সোমেন বসাক বলেন, ‘মার্কেটে ক্রেতাদের সমাগম শুরু হয়েছে। তবে এ বছর রমজানে বেচা-বিক্রি হচ্ছে ধীর গতিতে। এ মাসের বেতন পাওয়ার পর বেচা-কেনা বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
পাবনা শহরের মিতালী, বাবুল, প্রিন্স, ওকে, টাচ্, অনুপমা, মার্ক টেইলার্স, চলন্তিকা, স্টাইল লেডিস কর্নার, মেমসাহেব, প্রিয়াংকা লেডিস কর্নার, নিপুর লেডিস কর্নারসহ বিভিন্ন টেইলার্সে পোশাক তৈরির জন্য ভিড় করছেন ক্রেতারা।
শহরের হুমায়রা মার্কেটের টাচ্ টেইলার্সের মালিক সাইফুল ইসলাম সরদার এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘এ বছর রমজানের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পোশাক তৈরির অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে।’