বিশ্বনাথে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ওষুধ নিয়ে বাকবিতণ্ডার জের ধরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষ করেছে। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জনপ্রতিনিধিসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা গ্রাম ও কাদিরপুর গ্রামের লোকজনের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন জানান, আজ শনিবার সকালে রামপাশা গ্রামের তুরন মিয়ার বোন হাফছা বেগমসহ দুই নারী কাদিরপুর গ্রামে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যান। এ সময় কাদিরপুর গ্রামের শানুর আলীর সঙ্গে ওষুধ নিয়ে তাঁদের বাকবিতণ্ডা হয়। এ খবর উভয় গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা গ্রামের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে আহত হন অর্ধশতাধিক।
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন রামপাশা গ্রামের বাসিন্দা রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার খান, কাওছার আহমদ তুলাই, ফয়জুন নূর, তোরন মিয়া, ইসলাম উদ্দিন ও হাফছা বেগম; কাদিরপুর গ্রামের দিলারা বেগম, সুফিয়া বেগম, শানুর আলী, আবদুস সত্তার, মাহবুব আলম, মুছা, আবদুল হক, সাহেদ, সফি আলম, ইরন মিয়া, ইন্তাজ আলী, মোহাম্মদ, আঙ্গুর মিয়া, লিয়াকত, মুহিব, ছইল মিয়া, আবুল কালাম, আশরাফ, আখলুছ আলী, তৈমছু আলী, বশির, নূরজ্জামান, ইমন, আবুল কালাম, গয়াছ মিয়া, লেখনদর আলী, হরমুজ আলী, আবদুল মতিন প্রমুখ। সংঘর্ষে গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রামপাশা গ্রামের তুরন মিয়া বলেন, ‘আমার অন্তঃসত্ত্বা বোন হাফছা বেগমসহ দুই নারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে কাদিরপুর গ্রামের শানুর আলী তাঁদের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে ছুটে গেলে কাদিরপুর গ্রামের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
এদিকে কাদিরপুর গ্রামের শানুর আলী বলেন, ‘হঠাৎ করে রামপাশা গ্রামের লোকজন আমার ওষুধের দোকানে হামলা চালিয়ে লুটপাট শুরু করে। এ সময় বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।’
রামপাশা ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার খান বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা দুই নারীর ওপর হামলার ঘটনার জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এ সময় আমিও আহত হয়েছি।’
এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তিনটি শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া বিশ্বনাথ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুল হকও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিশ্বনাথ থানার ওসি রফিকুল হোসেন বলেন, সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ তিনটি গুলি ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা আমতৈল চরাবাজারের শুঁটকির আড়ত দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হন।