পরিবার জানত জেলে, যুবকের লাশ মিলল সকালে

খুলনায় গুলিবিদ্ধ লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম রাজু আহমেদ। তিনি যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার বাসিন্দা।
আজ শুক্রবার সকালে ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগরে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে রাজুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, গত বুধবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা রাজুর। স্বজনদের দাবি, মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন রাজু। আজ শুক্রবার রাজুর লাশ পেলেন স্বজনরা। গত বুধবার কারাগার থেকে রাজুকে আনতে গিয়ে স্বজনরা জানতে পারেন, মাইক্রোবাসে করে রাজুকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
চৌগাছা থেকে রাজুর লাশ নিতে স্বজনরা খুলনা রওনা হয়েছেন বলে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন।
জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিহত ব্যক্তির ছবি দেখার পর রাজু আহমেদের স্ত্রী সেতু আহমেদ লাশ শনাক্ত করেন।
রাজু আহমেদের প্রতিবেশী অধ্যাপক আতিকুর রহমান জানান, মহেশপুর উপজেলায় একটি মোটরসাইকেল চুরির মামলায় কয়েক মাস আগে রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই মামলায় জামিন হলে আবার ঝিকরগাছায় অন্য একটি মোটরসাইকেল চুরির মামলায় তাঁকে আটক দেখানো হয়। সর্বশেষ যশোর ঝিকরগাছা শার্শা থানার বিএনপির ৮০ জন নেতাকর্মীর নামে দেওয়া নাশকতা মামলায় রাজুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সব মামলায় গত মঙ্গলবার রাজু আহমেদের জামিন হয়। পরদিন গত বুধবার রাজুর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।
আতিকুর রহমান জানান, বুধবার রাজুর স্ত্রী সেতু আহমেদ বেলা ১১টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে যান। দুপুর ১টা পর্যন্ত কারাগারের ফটকে অপেক্ষা করলেও রাজুর দেখা পাননি তিনি। এদিকে কারাগার থেকে বলা হয়, রাজু মুক্তি পেয়েছেন এবং বেরিয়ে গেছেন। পরে সেতু ফটকের কাছে একাধিক ব্যক্তির কাছে শুনতে পান মুক্তি লাভের পর রাজুকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
যশোরের চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিয়ার রহমান জানান, রাজু আহমেদকে মহেশপুর থানার চুরি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁর পরিবারের সদস্যরা লাশের ছবি দেখে শনাক্ত করেছে বলে তিনি শুনেছেন।
মুক্তি পাওয়ার পর রাজুকে ‘তুলে নিয়ে যাওয়ার’ ব্যাপারে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মিজানুর রহমান জানান, কারা তুলে নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না।
এদিকে রাজুর প্রতিবেশী আতিকুর রহমান জানান, রাজু বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
তবে এ ব্যাপারে চৌগাছা বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানান, রাজু বিএনপির কর্মী ছিলেন না। বরং ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সঙ্গে রাজুর ওঠাবসা ছিল।
আজ সকালে লাশ উদ্ধার হওয়ার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান। তিনি জানান, যুবকটিকে ঘটনাস্থলেই এনে গলায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা হয়েছে। কারণ পাশে রক্ত পড়ে আছে।