রাজন হত্যা
জালালাবাদ থানার এসআই প্রত্যাহার
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/07/14/photo-1436895117.jpg)
সিলেটের জালালাবাদ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তিনি বলেছেন, ওই দুজনকে থানায় রেখে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয়। রাজনের পরিবার উভয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এই দুজনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
রাজন হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ঘাতকদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার সিলেট নগরীর কুমারগাঁও তেমুখী পয়েন্টে আয়োজিত বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এ কথা বলেন। তাঁর দাবি জানানোর পাঁচ ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে এসআই আমিনুল ইসলামকে জালালাবাদ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, রাজনের বাবা শেখ আজিজুর রহমান ও স্বজনদের বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হলো। তাঁকে উপ-পুলিশ কমিশনারের (উত্তর) কার্যালয়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
এর আগে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের সমাবেশে কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হয়। হাজার হাজার মানুষের কণ্ঠে ছিল একই সুর, ‘রাজনের খুনিদের ফাঁসি চাই’।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘সৌদি আরবের জেদ্দায় আটক খুনি কামরুল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও উদ্যোগ নিয়েছেন। রাজনের খুনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই রেহাই পাবে না।’
রাজনের খুনিদের পক্ষে কোনো আইনজীবীকে আদালতে মামলা পরিচালনা না করার আহ্বান জানান অ্যাডভোকেট মিসবাহ।
সমাবেশে রাজনের চাচা আবদুল মালিক খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। যে স্থানে রাজনকে হত্যা করা হয়েছে, সে-ই স্থানেই গাছে ঝুলিয়ে খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
রাজন হত্যা মামলার আসামি কামরুলের গ্রাম শেখপাড়ার পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন বলেন, ‘গ্রামের মানুষও রাজনের খুনিদের বিচার চায়। বর্বর এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কামরুল জড়িত থাকায় তাঁর পরিবারকে পঞ্চায়েত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন যুবলীগ নেতা মকসুদ আহমদ।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা জজ কোর্টের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) শামসুল ইসলাম, গোবিন্দগঞ্জ আবদুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদ আহমদ, কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, মোগলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম টুনু, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশ, কুমারগাঁওয়ের প্রবীণ বক্তিত্ব অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশের আগে নগরীর পাঠানটুলা থেকে তেমুখী পর্যন্ত বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন করেছে। সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল তেমুখী ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, মদিনা মার্কেট ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, পাঠানটুলা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, আখালিয়া ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, গুয়াবাড়ি ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, সোনাতলা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, আখালিয়া নতুন বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, বাদাঘাট বহুমুখী সমবায় সমিতি, মদিনা মার্কেট ইলেকট্রনিক ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, বড়গুল সমাজ কল্যাণ সংস্থা, বৃহত্তর কুমরাগাঁও এলাকাবাসী, শেখপাড়া সচেতন এলাকাবাসী প্রভৃতি।
মানববন্ধন শেষে মিছিল সহকারে কয়েক হাজার মানুষ সমাবেশে যোগ দেয়।