বনদস্যুদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ‘যাঁরা পথভ্রষ্ট হয়েছেন, ফিরে আসুন’

সুন্দরবনের বনদস্যুদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে যাঁরা ফিরে আসবেন আপনাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য যা যা করা দরকার আমাদের সরকার সেটা করবে। যাঁরা পথভ্রষ্ট হয়েছেন, তাঁরা ফিরে আসুন। স্বাভাবিক জীবনে চলে আসুন।’
আজ বুধবার বনদস্যুদের পুনর্বাসনের চেক হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বাগেরহাট শেখ হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে চেকহস্তান্তর অনুষ্ঠান হয়।
আত্মসমর্পণ করা সুন্দরবনের ১৩২ দস্যুর প্রত্যেককে স্বাবলম্বী করতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করছি যাতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে সুন্দরবনকে আনতে পারি।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘বাকি যাঁরা বনদস্যু বা জলদস্যু আছেন তাঁদের কাছে বার্তা হচ্ছে, আপনাদের কোনোক্রমে সেখানে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে দিব না। কোনোক্রমেই দস্যুতা আমরা করতে দেব না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে গেছে, এখন পিছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই।’
র্যাব ৬-এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সী, বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন, বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকাত আলী বাদশা, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হ্যাপী বড়াল, পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহম্মেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) কবির বিন আনোয়ার, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আব্দুস সামাদ, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. একরামুল হাবীব, জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালের ২৯ মে র্যাবের হেফাজতে আসে সুন্দরবনের দস্যু মাস্টার বাহিনী। দুই দিন ৩১ মে মোংলার ফুয়েল জেটিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে সুন্দরবনের প্রথম কোনো দস্যু বাহিনী অস্ত্র-শস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বনদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা শুরু হয়। এরপর ১৩ জুলাই বনদস্যু মজনু ও ইলিয়াস বাহিনী সহযোগীসহ আত্মসমর্পণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত এক বছরে ১২ বনদস্যু বাহিনীর ১৩২ জন সদস্য তাঁদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে আত্মসমর্পণ করে দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেন।
অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করা বনদস্যুদের প্রত্যেককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ও এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং র্যাবের পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনসেট ও ঈদ সামগ্রী দেওয়া হয়।