সাঁতার শেখাতে গিয়ে বাবার মৃত্যু, ছেলে নিখোঁজ

কীর্তিনাশা নদীতে গোসল করতে নেমে স্রোতে ভেসে গিয়ে আনিছ শিকদার (৪০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে তাঁর ১০ বছর বয়সী ছেলে আকাশ শিকদার। বাবা তাঁর ছেলেকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।
আজ সোমবার দুপুরে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আনিছ শিকদারের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার চাখার গ্রামে।
জাজিরা থানার পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শরীয়তপুরের জাজিরার জয়নগর গ্রামের মোতালেব ফকিরের জামাতা আনিছ শিকদার ঢাকার একটি পোশাক কারখানার বিদ্যুতের মিস্ত্রি ছিলেন। দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার সিপাহীবাগ এলাকায় থাকতেন। গতকাল রোববার ছোট ছেলে খিলগাঁও এলাকায় একটি বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকাশ শিকদারকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। আজ দুপুরে ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশে কীর্তিনাশা নদীতে গোসল করতে যান। আকাশকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় ছেলে নদীর স্রোতে পড়ে গেলে তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান আনিছ। ছেলেসহ তিনি স্রোতের তোড়ে পানিতে তলিয়ে যান। খবর পেয়ে আত্মীয়স্বজনরা ছুটে এসে আনিছকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশু আকাশকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আনিছ শিকদারের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, ‘আমাদের একসাথে সোমবার বাবার বাড়িতে বেরাতে আসার কথা ছিল। ছোট ছেলে আগে আসার বায়না ধরলে তার বাবা তাকে নিয়ে একদিন আগেই চলে আসে। বড় ছেলেকে নিয়ে আমি সকালে ঢাকা থেকে রওনা হই। মাওয়া ঘাটে এসে দুর্ঘটনার কথা শুনতে পাই। আল্লাহ কেন আমার এমন সর্বনাশ করলেন। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচব?’
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, নদীতে গোসল করতে গিয়ে বাবা তাঁর ছেলেকে সাঁতার শেখাচ্ছিলেন। হঠাৎ ছেলেটি নদীর গভীরে ডুবে যায়। বাবা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে স্রোতে দুজনই পানিতে তলিয়ে যান। বাবার মরদেহ খুঁজে পেলেও শিশুটিকে এখনো পাওয়া যায়নি। শিশুকে খোঁজা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও স্থানীয় মানুষ নদীতে শিশুকে খুঁজছে।
এদিকে, শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর মুন্সীকান্দি এলাকার কীর্তিনাশা নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় একজনের লাশ উদ্ধার করেছে পালং মডেল থানা পুলিশ।