দুবলার শুঁটকিপল্লীতে কোটি টাকার মাছ নষ্ট

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে তিনদিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দুবলার চরের বিভিন্ন শুঁটকিপল্লীতে মাছ শুকাতে পারছেন না জেলে-মহাজনরা। একদিকে রোদ না থাকা, অপরদিকে কুয়াশা ও বৃষ্টিতে মাছ শুকাতে না পারায় এরই মধ্যেই প্রায় কোটি টাকার কাঁচা মাছ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন দুবলা ফরেস্ট ক্যাম্প ইনচার্জ বন সংরক্ষক ফরেস্ট রেঞ্জার কাজী মোকাম্মেল কবির।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা মাছ আহরণে যেতে পারছে না গভীর সমুদ্রে। নানা প্রতিকূলতা ও একের পর এর দুর্যোগের কারণে জেলে-মহাজনরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তসহ গত বছরের চেয়ে এ বছর দুবলার শুঁটকি খাত থেকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতির আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন ফরেস্ট রেঞ্জার।
বন বিভাগ ও জেলে-মহাজন সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগর পাড়ের সুন্দরবনের দুবলার চরে এখন মাছ শুকানোর পুরো মৌসুম চলছে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে হঠাৎ নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়-বৃষ্টিতে মাছ ধরা ও শুঁটকি করার কাজ ব্যাহত হয়ে থাকে। দুবলার নিয়ন্ত্রণাধীন আশপাশের ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১৩টি চরের কয়েক হাজার জেলে ও শতাধিক মহাজন এ শুঁটকির কারবারের সঙ্গে জড়িত। এসব চরে উৎপাদিত শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হয়ে থাকে। আর বন বিভাগ মাছের এই শুঁটকিপল্লী থেকে প্রতি মৌসুমে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। রাজস্বের এ পরিমাণ কম-বেশি নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপরই।
দুবলার চরের শুঁটকিপল্লীতে মাছ শুকানোর এই ছবিটি পুরোনো। এবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে তিনদিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মাছ শুকাতে পারছেন না জেলে-মহাজনরা। পুরোনো ছবি : এনটিভি
মহাজনদের ডিপোর (মাছ কেনার ঘর) ম্যানেজার মো. ফরিদ ও রায়হান বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জেলেরা সব জাল-নৌকা নিয়ে চরে অলস বসে রয়েছেন। মাছ ধরতে যেতে পারছে না। আর আগের মাছ রোদের অভাব ও বৃষ্টির কারণে শুকানোও যাচ্ছে না।
বন সংরক্ষক (খুলনা সার্কেল) মো. আমির হোসাইন চৌধুরী ও পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় (বাগেরহাট) বন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সব ধরনের ঝড়-ঝাপটা মোকাবিলা করেই নিরাপদে থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে রাজস্ব আদায়ে সচেষ্ট থাকতে দুবলা ফরেস্ট ক্যাম্প ইনচার্জসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।