‘সুইজারল্যান্ড এই সংকটে পাশে থাকবে’

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন সফররত সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরসে। তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান।
পরে সাংবাদিকদের জানান, সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবেন তিনি। একপর্যায়ে সবাইকে চমকে দিয়ে বাংলায় বলেন, ‘সুইজারল্যান্ড এই সংকটে পাশে থাকবে।’
আজ মঙ্গলবার উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন করেন সুইস প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরসে। পরে উখিয়ায় আইওএম সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে কথা বলেন তিনি।
অ্যালেন বেরসে বলেন, ‘এখানে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ আছে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়াটা মোটেও সহজ নয়।’
সুইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যেসব সংস্থা তাঁদের (রোহিঙ্গা) সহযোগিতার জন্য কাজ করছে সেসব সংস্থার পাশে দাঁড়ানোটা এখন জরুরি। খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি, স্বাস্থ্যসেবা এগুলো হচ্ছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়ার মতো কাজ। একই সঙ্গে আমরা দেখছি প্রত্যাবাসন চুক্তি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।’
অ্যালেন বেরসে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য আমরা সব সময় প্রস্তুত।’ তিনি বলেন, চলমান সংকট সমাধানের বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যকার চুক্তি ইতিবাচক পদক্ষেপ।
সুইস প্রেসিডেন্ট জানান, রোহিঙ্গারা যেন স্বেচ্ছায় মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করবে সুইজারল্যান্ড।
সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বেরসে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, জেনেভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শামীম আহসান।
বিমানবন্দরে সুইস প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানান রোহিঙ্গা শরণার্থী কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মুহাম্মদ আবুল কালাম, জেলা প্রসাশক মোহাম্মদ আলী হোসেনসহ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম), জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা।
বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। হাসপাতালে তিনি সুইজারল্যান্ড সরকারের পক্ষ থেকে উন্নতমানের ১০০ বিছানা ও বিভিন্ন চিকিৎসার সরঞ্জাম হস্তান্তর করেন। পরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা সম্পর্কে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কথা শোনেন এবং বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন।
হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে দুপুরে কক্সবাজার শহর থেকে কুতুপালং এসে পৌঁছান সুইস প্রেসিডেন্ট। তিনি প্রথমে কুতুপালং ডি-৪ আইওএম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং ইউনিসেফ স্থাপিত শিশুবান্ধব কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি রোহিঙ্গা শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ক্যাম্পে গিয়ে একাধিক রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষের কথা শোনেন অ্যালেন বেরসে।