নাশকতা প্রতিরোধে বন্দরনগরীতে মহড়া

মোটরসাইকেলে করে দুই দুর্বৃত্ত একটি ট্রাকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। মুহূর্তেই ট্রাকটিতে আগুন ধরে যায়। একই সাথে পরপর কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে দ্রুত এলাকা ছাড়ে মোটরসাইকেল আরোহীরা। সৃষ্টি হয় একটা ভীতিকর পরিবেশ।
দুর্বৃত্তদের এই নাশকতা শেষে শুরু হয় সহিংসতার শিকার আহতদের বাঁচার লড়াই। আগুন থেকে রক্ষা পেতে চালক ও তাঁর সহযোগী ট্রাক থেকে লাফিয়ে পড়েন। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গড়াগড়ি দেন। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ট্রাকচালক ও তাঁর সহযোগীদের উদ্ধার করেন। একই সময়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কয়েকটি দল। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আহতদের।
এটি কোনো বাস্তব নাশকতা বা সহিংসতার দৃশ্য নয়। আজ বুধবার বিকেলে বন্দরনগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আয়োজিত মহড়ার দৃশ্য এটি। বাস, ট্রাক বা যানবাহনে পেট্রলবোমাসহ নাশকতারোধে ও অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য চালক, সহকারী ও পরিবহন শ্রমিকদের নিয়ে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এ মহড়ার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন, পুলিশ সুপার কে এম হাফিজ আকতার বক্তব্য দেন। মহড়ায় বিজিবির উপ-অধিনায়ক মেজর তানভির আহমেদ ও বিজিবির পরিচালক অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
মহড়ায় বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনার প্রায় ১৫০ জন চালক ও সহযোগীদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বিজিবির ৭০ জন, ফায়ার সার্ভিসের ৫০ জন সদস্য এ সময় তাঁদের সহযোগিতা করেন।
যানবাহন চালক, সহযোগী ও শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়াতে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ, আগুন নেভানো এবং আত্মরক্ষার কৌশল মহড়ায় তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে নাশকতা ঠেকাতে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে চট্টগ্রামে নাশকতা কম হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।